এই ব্লগটি সন্ধান করুন

বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০১৩

এখন শুধু ভাবী!


দানীং আমার কী যে হলো কিছুই বুঝতে পারি না। খেতে, বসতে, শুতে এমনকি ঘুমাতে পর্যন্ত ইচ্ছে করে না। ভাগ্যিস পোশাক পরিধানের সময় এমন অনীহা হয় না। হলে যে কী বিব্রতকর অবস্থায় পড়তাম তা আল্লাহ মালুম! তো আমার এই অনীহাপ্রীতির মূল কারণ যে প্রেম, ইহা বোধ করি আজকালকের ফিডার খাওয়া পোলাপানও অনুমান করতে পারে। আর যদি কেউ ইহা অনুমান করিতে ব্যর্থ হয়, তবে সে হচ্ছে আমার ক্লাসমেট প্রিয়া! অবশ্য তার অনুমান না করার পেছনে যথেষ্ট কারণও বিদ্যমান ছিল। কোথায় যেন শুনেছিলাম- ‘একটি মেয়ে যখন প্রেমে পড়ে তখন তার প্রেমে পড়ার বিষয়টি একমাত্র সেই মেয়েটি ছাড়া আর কেউ জানতে পারে না। অথচ একটি ছেলে যখন নাকি কোনো মেয়ের প্রেমে পড়ে তখন দুনিয়ার সবাই বিষয়টি জেনে যায়, শুধু জানতে পারে না ওই মেয়েটি!’ যেহেতু আমি ছেলেদের ক্যাটাগরিতেই পড়ি, তাই আমার বেলাতেও এর কোনো ব্যাতিক্রম হয়নি। অর্থ্যাৎ, দুনিয়ার সবাই জানত আমি প্রিয়াকে ভালোবাসি। কিন্তু আমার ক্লাসমেট প্রিয়া কখনো এটি জানতে বা বুঝতে পারেনি। আর এভাবেই লুকোচুরির মাধ্যমে কোনো রকমে ঠেলেঠুলে চলছিল আমাদের… থুক্কু! আমার প্রেম।
প্রিয়া আমার ভালোবাসার কথা না জানলেও তার সাথে আমার বন্ধুটা কিন্তু বেশ ভালোই ছিল। আর তাই তো প্রেমের টানেই হোক কিংবা হোক বন্ধুত্বের টানে সে কলেজের পাশাপাশি রেগুলার আমাদের বাসায়ও যাতায়াত করত। এমনকি আমি বাসায় না থাকলেও নাকি প্রিয়া এসে আমাদের বাসার সামনে উঁকি-ঝুঁকি মেরে যেত। তার এরকম উঁকি-ঝুঁকি মারার কারণটাকে আমি অবশ্য পড়ালেখার প্রতি ভীষণ দুর্বলতা এবং আমার প্রতি প্রবল আগ্রহ আছে বলে মনে করতাম! আর তাই তো সব সময় নানান কায়দায় প্রিয়াকে শুধু হেল্প করার সুযোগ খুঁজতাম। কিন্তু বিরক্ত হতাম তখন যখন প্রিয়ার মুখে আমার চেয়ে আমার বড় ভাইয়ের বেশি প্রশংসা শুনতাম। আমার ক্লাসমেট আমাকে ছেড়ে কেন আমার বড় ভাইয়ের প্রশংসা বেশি করবে এটাই বুঝে উঠতে পারতাম না।
যাই হোক- প্রিয়াকে না জানিয়ে তার সাথে লুকোচুরি প্রেম তো অনেক করলাম, এবার আর না। যে করেই তাকে আমি প্রপোজ করে ছাড়বই। এখন কিভাবে কী করা যায় তা নিয়ে চিন্তায় বসলাম। চিন্তা করতে করতে কখন যে ভ্যালেন্টাইন্স ডে কাছে চলে আসলো তার কোনো টেরই পেলাম না। ভাবলাম এই তো সুযোগ! এবারের ভ্যালেন্টাইনেই না হয় প্রিয়াকে নিজের মনের কথা জানাব। কিন্তু যেই ভাবা সেই মোতাবেক কাজ আর করা হলো না। অর্থ্যাৎ মনের মাঝে সাহসের ঘাটতি থাকায় ভ্যালেন্টাইনের দিন প্রিয়াকে প্রপোজ করার ভাবনাটাকে আর বাস্তবে রূপ দেওয়া গেল না।
এ দিকে এই ভ্যালেন্টাইনের দিনে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমার এক বন্ধুর জন্মদিন পড়ে গেল। সারা জীবন দেখে আসলাম, যে দিন যার জন্মদিন হয় সে দিন সে তার বন্ধুবান্ধব আর আত্বীয়স্বজনদের নিজের বাড়িতে দাওয়াত করে খাওয়ায়। কিন্তু আমার বেলায় হলো তার ঠিক উল্টো! অর্থ্যাৎ জন্মদিনের দিন সেই বন্ধুটি নিজেই এসে আমাকে ধরল এদিন তাকে ভালো কোনো হোটেলে নিয়ে কিছু খাওয়ানোর জন্য! আমি অবশ্য প্রথমে তার অনুরোধ থেকে বাইন মাছের মতোন মোচর দিয়ে দূরে সরে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পারলাম না। কারণ এখানেও আমার ভাগ্য আমাকে সহায়তা করেনি। অতএব তাকে হোটেলে নিয়ে খাওয়ানো বাদে আর কোনো গতি নেই। বিকেলে সেই বন্ধুকে নিয়ে চলে গেলাম শহরের এক নামহীন চাইনিজ হোটেলে! খাওয়া-দাওয়া শেষে নিজের পকেট থেকে কোরবান করলাম নগদ ৪৮০ টাকা। এরপর তাকে বিদায় জানানোর পর হোটেল থেকে বের হতে গিয়ে দেখলাম সেখানের এক কোনার টেবিলে মোটামুটি বড় ধরনের আয়োজন করে খাবার সাজিয়ে বসে আছে আমার ক্লাসমেট ওরফে মনের মানুষ প্রিয়া! দেখে বেশ অবাক হলেও কিছুই বলার ছিল না। আস্তে আস্তে তার টেবিলের সামনে যেতেই সেও আমাকে দেখে তাৎক্ষণিক অবাক হওয়ার ভান করল। কুশল বিনিময়ের পর আমি তার টেবিলের বিপরীত দিকের চেয়ারটায় বসতে চাইলে সে আপত্তি জানিয়ে বলল, জায়গাটা নাকি অন্য একজনের জন্য রিজার্ভ করা আছে। আমি বললাম, কে সেই একজন? জবাবে প্রিয়া জানায় তার ভালোবাসার মানুষ! এই কথা শুনে আমার মাথার তাপমাত্রা যেন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে আরো ১০৮ ডিগ্রি বেড়ে গেল। মনে মনে বললাম, শালা তুই যেই হোস না ক্যান আজ তোকে আমি দেখেই ছাড়ব। (এখানে তাকে শুধু দেখে নেওয়ার কথা বলেছি। কোনো কিছু করার কথা কিন্তু আর আমি বলিনি। কারণ, আমার মাঝে আবার সাহসের মাত্রাতিরিক্ত অভাব আছে কিনা!)
দেখতে দেখতেই চলে আসলো প্রিয়ার সেই ভালোবাসার মানুষ। তো যাকে দেখার জন্য আমি এতক্ষন মনে মনে বাঘের মত গর্জে উঠেছিলাম, সেই তাকে দেখার পর যেন পুরো ভেজা বিলাই হয়ে গেলাম! আর বিলাই না হয়েই বা কী করার আছে? কারণ প্রিয়ার ভালোবাসার মানুষ আর অন্য কেউ নয়, তিনি সাক্ষাৎ আমারই আপন বড় ভাই! এখন যেই ভাইয়ার সামনে ঠিকমতো দাঁড়িয়ে কথা বলতে ভয় পাই সেই ভাইয়ার সামনে তার ভালোবাসার মানুষকে নিজের বলে দাবি করার মত ততটা সাহসী মানব আমি নই! আর তাই তো তাকে পাশ কাটিয়ে কোনো রকমে হোটেল থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলাম। কিন্তু লাভ হলো না। ভাইয়া আমাকে দেখে ফেললেন প্রিয়ার সাথে কথা বলা অবস্থায়। তিনি আমাকে ডেকে বললেন, এখানে কেন এসেছিস? কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম, এক বন্ধুর জন্মদিন ছিল তাই সে আমাকে খাওয়ানোর জন্য এখানে নিয়ে এসেছে। খাওয়া শেষে দেখলাম প্রিয়া এখানে বসে আছে। তাই তার সাথে কথা বলছিলাম। ভাইয়া বললেন, প্রিয়াকে তুই চিনিস? বললাম, হুম… আমরা একই ক্লাসে পড়ি। এরপর ভাইয়া বললেন, ঠিক আছে এখন বাসায় চলে যা। আর শোন, আমি যে প্রিয়ার সাথে হোটেলে খাবার খেতে এসেছি এটা কিন্তু বাসায় কাউকে বলিস না। আমি বললাম- জি আচ্ছা, বলব না। এরপর ভাইয়াকে বললাম, ঠিক আছে আমি তাহলে এখন যাই। ভাইয়া বললেন, আচছা যা।
এ দিকে আমাদের দুই ভাইয়ের কথাবার্তা গুলো পেছনের টেবিল থেকে সব শুনছিল প্রিয়া। তাই বিদায়ের আগে প্রিয়াকে বললাম, প্রিয়া এখন তাহলে আমি আসি। তারপর রাজ্যের তামাম দুঃখগুলোকে নিজের কাঁধে নিয়ে হোটেল থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার জন্য সামনের দিকে অগ্রসর হলাম। যেই না এক পা সামনে বাড়ালাম অমনি প্রিয়া পেছন থেকে ডেকে আমাকে বলল, বুঝলি সুমন… সব যেহেতু জেনেই গেছিস তো আজ থেকে আমাকে আর প্রিয়া ডাকার কী দরকার? এখন থেকে আমি শুধুই তোর ভাবী!!
প্রথম প্রকাশ : দৈনিক নয়াদিগন্ত, ১ মার্চ ২০১২

বুধবার, ১ মে, ২০১৩

একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প।

একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প। না পড়লে মিস
করবেন কিন্তু......
অয়ন মা বাবার একমাত্র ছেলে, ঢাবিতে চান্স
পেয়েছে তাই খালার বাসায় উঠেছে । খালার
ছেলে নেই মেয়ে আছে একটা আসার সময়
শুনে এসেছে, মেয়েটা যে কলেজে উঠেছে সেটা জানেনা সে ।
সব
সময় পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকত অয়ন তাই
প্রেম নামক শব্দটা তার
আশেপাশে আসেনি কিন্তু
নীরাকে দেখে তার চোখে যেন দুনিয়ার সব চাইতে গুরুত্ব পূর্ণ জিনিসটা যে প্রেম
সেটা মনে পরে গেল মানে লাভ এট ফার্স্ট
সাইট
যাকে বলে। ভার্সিটি তে প্রথম
পড়া শোনা তাই
একটু কমিয়ে দিল অয়ন। সারাদিন খালার বাসায়
বসে থাকে নীরাকে দেখার আশায়।
এদিকে নীরার
কোন বিকার নেই
কলেজে আসছে যাচ্ছে দেখা হলে কথাবার্তা বল
এই টাইপ এভাবে প্রায় তিন মাস কেটে গেল নীরা কথাবার্তা সামান্য বাড়ালেও অয়ন
সাহস
পাচ্ছেনা তাকে কিছু বলার
পাছে যদি খালাকে বলে দেই তাহলে সব শেষ ।
একদিন ভাগ্য সু প্রসন্য হল তার, নীরার
সাথে কি একটা কাজে থাকে বাইরে যেতে বলে খালা। এক রিকশাতে পাশাপাশি সে আর নীরা,
ভাবতেই মনটা খুশিতে ভরে উঠল অয়নের
আসলে সে অপেক্ষা করতে করতে এতই অস্থির
হয়ে উঠেছিল যে ছোট এই জিনিসটা ও
থাকে আনন্দ দিচ্ছে।
বাস্তবে দেখা যাচ্ছে সে রিকশাতে মূর্তি হয়ে শব্দটি মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না।
অবশেষে নীরাই মুখ
খুলল।
-অয়ন ভাই, কি ব্যাপার আপনি এমন জবুথবু
হয়ে আছেন কেন?
-না, এমনি!! -শরীর খারাপ?? বাসায় চলে যাবেন??
-না না শরীর খারাপ হতে যাবে কেন?(এবার
ঠিক
হয়ে বসল সে পাছে না আবার
নীরা সত্যি সত্যি তার
শরীর খারাপ মনে করে) -তাহলে নিশ্চয় মন খারাপ আপনার!!!
-হুমম, তা বলা যাই।
-মানে, আপনার সত্যিই মন খারাপ!!!
আমি জানি!!!!
-আসলে নীরা আমার একটা কথা বলার ছিল!!
-কাকে??? -না, মানে!! কাউকে না!!
-আচ্ছা আপনি যে একটা ভীতুর ডিম
সেটা আপনি জানেন??
-না, মানে তোমাকে আমার একটা কথা বলার
ছিল!!!!
-বলতে হবে না আমি জানি!!!!!!!! নীরার ফর্সা মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে উঠছিল,
অয়ন
আর কোন কথা বাড়ায় নি আস্তে করে নীরার হাত
ধরল সে। সামান্য কেঁপে উঠল নীরা, চোখ
দিয়ে পানি পরছিল তার...........................
নীরার বাবার অফিসে বসে আছে অয়ন। কি কারনে জানি তিনি ডেকে পাঠিয়েছেন
অয়নকে।
অয়নের চোখে এখন খালি আগামীর চিন্তা,
নীরাকে নিয়ে নীরা ভার্সিটি ভর্তি হবে এবা
সে পাশ করে ভাল জব
করবে নীরাকে নিয়ে সুন্দর আগামি গড়বে............।।
-অয়ন, বাবা তোমার জন্য একটা চাকরির খবর
এনেছি আমি। বেতন ভাল , থাকার জন্য
বাসা দেবে তোমাকে তোমার পড়া শোনার ও
কোন অসুবিধা হবে না,
বাবা তোমাকে একটা কথা বলব??? -জি, বলেন খালু!!
-ক্যারিয়ার সবার আগে, বাকিটা পরে জীবন
এখনো অনেক বাকি।
-জি, খালু আমি চাকরিটা করব।
-কালকে থেকে জয়েন ডেট।
-আচ্ছা, আমি কালকে থেকে যাব। খালুর কথার ইঙ্গিতটা ধরে ফেলেছে অয়ন তাই
চাকরিটা করবে বলে দিয়েছে সে ।
উনি যা করছেন
হয়তবা ভালর জন্য করেছেন
এটা ভেবে সে বেরিয়ে পরল। আজকেই কাপড়
চোপর গুছিয়ে খালার বাসা থেকে বেরিয়ে যাবে সে
নীরা কাঁদছে তার রুমে একা একা, অয়ন এসেছিল
কাপড় চোপড় ,বই পত্র নিয়ে যেতে ওর
রুমে ঢুকেই
অবাক হয়ে গিয়েছিল সে তারপর সব শুনে পাথর,
যতক্ষন অয়ন ছিল সে অয়নের দিকে তাকিয়ে ছিল
সে যেন আর দেখবেনা তাকে। অয়ন চলে যেতেই
মার
কাছে গেল সে
- মা অয়ন ভাই চলে গেল কেন?
-সে একটা চাকরি পেয়েছে, তোর বাবা চাকরিটা ধরিয়ে দিয়েছেন।
-চাকরিটা কি উনার খুব দরকার ছিল???
-সেটা তোর বাবা ভাল জানেন!! আমার
কাছে এসব
বলতে আসবি না, তোর বাবার থেকে জিজ্ঞেস
করে নিস। মেয়ের সাথে এই প্রথম রাগ দেখালেন
তিনি।
নীরার মনটা একেবারে ভেঙ্গে গেল।
রুমে কাঁদতে কাঁদতে পুরনো দিন গুলোর
কথা মনে পরে গেল তার ।অয়ন
ভার্সিটি থেকে কখন আসবে সে অপেক্ষায় থাকত সে কখনো বের হত
একসাথে এইখানে ওইখানে বেড়াতে যাওয়া খুন
বড্ড মনে পরছে তার । অয়নের সাথে যেদিন
প্রথম
রিকশায় করে গিয়ে ছিল সেদিন
রাতে ছাদে একসাথে বসে ছিল দুজনে । নীরা আর
অয়ন ছাদে বসে ছিল একটু দূর
করে পাছে খালা এসে পরেন এই ভেবে, নীরার
কাছে চাঁদের আলোয় অয়নকে যেন কোন মায়াময়
যুবকের মত লাগছিল যাকে সে হাজার বছর
ধরে খুজেছিল। কেন জানি লাগছিল তার জন্যই অয়নের ঢাকা আসা তাদের পরিছয় যেন কোন
অমোঘ নিয়মে বাঁধা ছিল। অয়নকে তার অবশ্য
প্রথম দেখাতেই ভাল লাগেনি কেমন যেন
বোকা বোকা টাইপ কিন্তু
দেখতে দেখতে সে কেমন
করে যেন সপ্নের রাজপুত্র হয়ে যাই তার কাছে।
যাকে সে আপন করে পাবেই অয়নটার
হাবভাবে বেশ
বুঝা যেত তাকে সে পাগলের মত
ভালবাসে কিন্তু
নীরা পাত্তা না দেওয়ার ভাণ করত আসলে ওকে খুঁচিয়ে বের করতে চেয়েছিল
সে কিন্তু
বেচারা ভীতুর ডিমটা সেটা কখনই
পারবেনা বলে একদিন মাকে বলে সে অয়ন
ভাইকে নিয়ে বের হয় মা খুশি মনেই
অয়নকে ডেকে দিয়েছিল। আবার ডুকরে কাদতেঁ লাগল
সে..................।।
বাবা কয়েকদিন ধরে ফোন করছেন বারবার
বলছেন
একটা ভাল দেখে স্যট বানাতে অফিসের
ব্যস্ততায় একদম সময় করতে পারছে না।আজকে ফোন করার
পর সে বাবাকে বলতেই বাবা বললেন সময় নেই
চারদিন পর নীরার এঙ্গেজমেন্ট তুই থাকবি।
বলেই
বাবা কেটে দিলেন!
অয়নের মাথায় যেন বজ্রপাত হল । চার বছর ধরে যার
জন্য এত পরিশ্রম করছে চারদিন পর তার
এঙ্গেজমেন্ট!!!!!!! এখন আর কিছুই করার
নেই!!!!!
নিয়তি তাকে নিয়ে এত বড়
একটা খেলা খেলবে সে তা বুঝতেই পারেনি। সব
হারানোর শোক থাকে চারপাশ
থেকে ঘিরে ধরল ,
কিন্তু মনকে শক্ত করল সে ভাবল আমার কিছুই
করার নেই আর আজ আমি এক পরাজিত .........
নীরাদের বাসায় তার আগের রুমটাতে বসে আছে সে,
তার মা বাবা আসবেন
এটা তারা আগে জানাননি।
যাইহোক মেহমান নেই তেমন একটা , আর
মনে হয়
বর আসেনি এখনো মাথা ধরেছে বলতেই খালা তার
আগের রুমে গিয়ে শুতে বলল।
এসে শুইনি সে বসে আছে আর বিষাদের
সমুদ্রে সাতার কাটছে কতক্ষন ছিল
বলতে পারবেনা শুধু দরজা খোলার আওয়াজ
পেয়ে মাথা তুলল যা দেখল তার মাথায় আরেকবার
বজ্রপাত হল, নীরা সামনে দাঁড়ানো। নীরার
চোখে বিস্ময় সে টের পাওয়ার আগেই
দেখে নীরা তার বুকে । এই মেয়ে করে কি?
তার মান
ইজ্জত আজ ধুলোয় মিটবে। বিহিত করতে হবে থাকে একটা
-নীরা!!!! কি ব্যাপার?? তুমি এখানে কেন???
-কেন?? আমার
আসতে মানা আছে নাকি(কান্না আর আনন্দ
মিশ্রিত কন্ঠ নীরার) খটকা লাগল অয়নের
-খালা,খালু আছেন আমার বাবা মা ও দেখলে কেলেংকারি হয়ে যাবে !!!!!!!!!
-মা পাঠিয়েছেন আমাকে এখানে!!!!!
-কেন?????
-বললেন, যা তোর বর আগে অয়ন যে রুমে থাকত
সে রুমে আছে...।
অয়ন এবার বুক থেকে তুলে নিয়ে চোখের সামনে দাড়া করাল নীরাকে , যেন আকাশ
থেকে পরি নেমে এসেছে। বিয়ের সাজে অসম্ভব
সুন্দর লাগছে তাকে
-এগুলো আমার জন্য সাজোনি তুমি????
( দুস্টুমি হাসি অয়নের মুখে)
-না, আমার বরের জন্য সেজেছিলাম। কোন ভীতুর
ডিমের জন্য না।(নীরার চোখে কপট রাগ)
-তাহলে আমি দেখব না তোমাকে!!
(অন্যদিকে ফিরে গেল অয়ন)
-না দেখলে আমার বয়েই গেছে( হাসিটা কোন
মতে চাপাল নীরা)
.
.
.
.
 নাহিদ

আমি তোমাকে কোনোদিন দেখিনি কিন্তু মনেরভিতরে তোমার একটা ছবি একে ফেলেছিলাম।

আমি তোমাকে কোনোদিন দেখিনি কিন্তু মনের
ভিতরে তোমার একটা ছবি একে ফেলেছিলাম।
আমার ভালবাসার মানুষ যতই থাকুক না কেন
যেদিন তোমাকে আমার সামনে পাবো ঠিক সেই
মুহূর্ত থেকে তুমিই হবে আমার সবচেয়ে আদরের।
আমি না দেখেই সত্যি তোমাকে অনেক ভালবেসে ফেলেছি কারন
আমি জানি তুমি হবে ঠিক তোমার বাবার মত।
মটু,গুল্লু... :')
অনেক আদর আদর...ঠিক যেন একটা আদরের
বস্তা!!!
তো কি হয়েছে তোমার কোন অস্তিত্ব নেই। তুমিই তো আমার স্বপ্ন।
তোমাকে আর তোমার বাবা কে নিয়ে আমি অনেক
স্বপ্ন সাজিয়েছি বাচ্চা।
আমার একটা বাচ্চা না।
দুই দুইটা বাচ্চা।
একটা বড় বাচ্চা,যাকে তুমি বাবা বলে ডাকবে আর আমার
ছোট্ট বাচ্চা হলে তুমি।
দুই জন কে আমি নিজের হাতে খাইয়ে দিব।
মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পারাবো।
অনেক স্বপ্ন আমার তোমাকে নিয়ে।
তো কি হয়েছে যে তোমার কোন অস্তিত্ব নেই। তোমাকে যখন আমি আমার ভিতরে অনুভব
করি তখন তোমার বাবার মুখটা আমার
সামনে ভেসে উঠে।
তোমাকে যখন
গুটি গুটি পায়ে হাটতে দেখবো তোমার বাবার
ছেলে বেলা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠবে। সব কিছুর মাঝে আমি তোমার
বাবা কে খুঁজে ফিরি কেন জানো?
কারন আমি আমার হৃদয় টা উজার করে তোমার
বাবা কে ভালবাসি।
আর তোমাকে নিয়ে আমি শুধু স্বপ্ন সাজাই।
জানি,তোমার কোন অস্তিত্ব নেই। কি হয়েছে তাতে?
বাচ্চা...তুমি কি জানো কেন তোমার কোন
অস্তিত্ব নেই?
জানো না...
শোনো তাহলে...কারন তোমার কোন বাবা নেই।
কেন তোমার বাবা নেই জানো? কারন তোমার মা এর ভাগ্যে তোমার বাবা ছিল
না।
তোমার মা আর বাবার কোন দিন বিয়ে হয়নি।
তারা শুধু একজন আর একজন কে ভালোবাসতো।
এক সময় তোমার বাবা নামক মানুসটা তোমার
মা কে ছেড়ে চলে যায় তাই তোমার অস্তিত্ব কোনদিন আমি আমার ভেতর অনুভব
করতে পারিনি।
শুধু স্বপ্ন দেখেছিলাম একটা সুন্দর জীবনের।
যা কোনদিন পূরণ হবার ছিল না।
কিন্তু তুমি সারাজীবন বেচে থাকবে আমার
ভালবাসায়। আমার হৃদয়ে।
আমার অস্তিত্বে...
.
.
.
.
 নাহিদ

অনেক দিন আগের কথা । একটা নদীরপাড়ে একটা অনেক বড় আপেল গাছ ছিল ।একটা ছোট্ট ছেলে প্রতিদিন গাছটারকাছে যেতো এবং গাছটারকাছাকাছি খেলতে পছন্দ করতো ।

অনেক দিন আগের কথা । একটা নদীর
পাড়ে একটা অনেক বড় আপেল গাছ ছিল ।
একটা ছোট্ট ছেলে প্রতিদিন গাছটার
কাছে যেতো এবং গাছটার
কাছাকাছি খেলতে পছন্দ করতো ।
সে গাছে চরতো , আপেল খেতো । এবং ক্লান্ত হয়ে গেলে গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পরতো ।
সে গাছটাকে ভালবাসাতো । আর
গাছটা ভালবাসতো ছেলেটার সাথে খেলতে ।
সময় গড়িয়ে চলল . . . . . ছোট্ট ছেলেটা বড়
হতে লাগলো , এবং তখন সে আর আগের
মতো প্রতিদিন গাছটার চারিদিকে খেলতে যেতো না । একদিন
ছেলেটা গাছটার কাছে আসলো । তার মন খুব
খারাপ ছিলো । গাছটা ছেলেটাকে বলল
"আসো। আমার সাথে খেলো ।" ছেলেটা জবাব
দিলো "আমি আর ছোট্ট বাচ্চা না । আমি এখন
কোন গাছের সাথে খেলি না । আমার এখন খেলনা দরকার । এবং খেলনাকিনার জন্য
দরকার টাকা ।" গাছটা বলল "দুঃখিত ।
আমার কাছে তো টাকা নেই । কিন্তু
তুমি আমার আপেল গুলো নিতে পারো ।
এগুলো বেচে তুমি টাকা পেয়ে যাবে ।"
ছেলেটা গাছের কথা শুনে উত্তেজিতো হয়ে উঠলো । সেগাছের
সব আপেল পেড়ে নিল।
এবং খুশি মনে ফিরে গেলো । ছেলেটা আপেল
গুলো পেড়ে নেবার পর আর ফিরে আসলো না ।
গাছটার মন খারাপ হয়ে গেলো । একদিন
ছেলেটা আবার গাছটার কাছে ফিরে আসলো উত্তেজিতো ভঙ্গিতে ।
গাছটা ছেলেটাকে বলল "আসো। আমার
সাথে খেলো ।" ছেলেটা বলল "আমার খেলার
সময় নেই । আমাকে আমার পরিবারের জন্য
কাজ করতে হবে । আমার এখন বসবাসের জন্য
একটা ঘর লাগবে । তুমি কি আমাকে সাহায্য করতে পারবে ?" গাছটা জবাব
দিলো "দুঃখিত। আমি তো তোমাকে ঘর
দিতে পারবো না । কিন্তু তুমি আমার
ডালগুলো কেটে ঘর বানাতে পারো ।"
ছেলেটা গাছটার সব ডাল
কেটে নিলো এবং খুশি মনে চলে গেলো । গাছটা ছেলেটার আনন্দ দেখে অনেক খুশি হল
। কিন্তু ছেলেটা আর ফিরে আসলো না ।
গাছটা আবার একাহয়ে গেলো । একদিন
গ্রীষ্মের একটা প্রচন্ড গরমের
দিনে ছেলেটা আবার আসলো ।
গাছটা ছেলেটাকে দেখে খুব খুশি হল । গাছটা ছেলেটাকে বলল "আসো। আমার
সাথে খেলো ।" ছেলেটা বলল "আমি খুব
দুঃখি । আমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি । আমি এখন
একটু সমুদ্রে ঘুড়ে আসতে চাই ।
তুমি কি আমাকে একটা নৌকাদিতে পারবে ?"
গাছটা জবাব দিলো "আমার গুড়ি তুমি নৌকা বানাতে কাজে লাগাতে পারো ।
তুমিঅনেক দূরে ঘুড়তে যেতে পারবে এবং আনন্দ
পাবে ।" তখন ছেলেটা গাছের
গুড়ি কেটে নিলো এবং একটা নৌকাবানালো ।
সে সমুদ্র ভ্রমনে চলে গেলো এবং অনেক দিন
পর্যন্ত আর ফিরলো না । ছেলেটা অনেক অনেক বছর পরআবার ফিরে আসলো ।
গাছটা ছেলেটাকে দেখে বলল "আমি খুবই
দুঃখিত বাবু । তোমাকে দেওয়ার মতো আমার
আর কিছুই নেই। তোমার জন্য কোন আপেল
নেই।" ছেলেটা বলল "আপেল
খাওয়ারমতো দাত আমার নেই ।" গাছটা বলল "আমার পিঠে চড়ার জন্য কোন গুড়ি নেই ।"
ছেলেটা বলল "আমি অনেক বুড়ো হয়ে গেছি ।
তাই তোমার পিঠে চড়তে পারবো না ।"
গাছটা দুঃখ নিয়ে বলল"তোমার জন্য আমার
কাছে আর কিছুই নেই । যা আছে , তা হল কিছু
মরমরা শিকড় ।" ছেলেটা বলল "আমার এখন বেশি কিছুই চাইনা । শুধুবিশ্রা মের
একটা জায়গা পেলেই আমি খুশি ।"
গাছটা একটু খুশি হয়ে বলল"পুরোনো গাছের
শিকড় বিশ্রামের জন্য আদর্শ জায়গা ।
আসো আমার সাথে এসে বসো এবং বিশ্রাম
নাও।" ছেলেটা গাছটার পাশে এসে বসলো । গাছটা অনেক
খুশি হলো এবং অশ্রুমাখা হাসি হাসলো ।
---/এই গল্পটা সবার জন্যই প্রয়োজন
গল্পটা প্রতিকি ।
এখানে গাছটা দিয়ে আমাদের মা-
বাবা কে বুঝানো হয়েছে । আমরা যখন ছোট ছিলাম । আমরা মা- বাবার
সাথে খেলতে পছন্দ করতাম । যখন আমরা বড়
হয়ে যাই তখনতাদেরকে ছেড়ে চলে যাই ।
আমাদের প্রয়োজনে অথবা যখন
আমরা বিপদে পরলেই শুধু তাদের
কাছে ছুটে আসি । মা-বাবা সব সময় আপনার সাথেই থাকবে । এবং আপনাকে খুশি করার
সাধ্যমত চেষ্টা করেন । আমাদের অনেকের
অবস্থাই অনেকটা গল্পের ছেলেটার মতো ।
যেখানে ছেলেটা "গাছ" টার সাথে নিষ্ঠুর
ব্যাবহার করেছে , গাছটা কে সবসময়
একটা বোঝা মনে করেছে । ভুলে যাবেন না , মা-বাবা আপনার জন্য অনেক বড় সম্পন ।
আল্লাহতালা র সর্বশেষ্ঠ উপহার আপনার জন্য
। তাদেরকে বোঝা মনেকরবেন না । আর
তাছাড়া মা- বাবা আপনারসাথে সারাজীবন
থাকবে না । তাই আসুন
আজকে থেকে প্রতিজ্ঞা করি মা- বাবাকে আর কখনো কষ্ট দিবো না ।
.
.
.
.
 নাহিদ

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৩

একটি মিনি উপন্যাস


স্টার্ট। থ্রি… টু… ওয়ান… জিরো… এ্যাকশন!

ফুশ্‌… শ… শ…!! না এটা কোনো গাড়ীর টায়ার পাংচারের শব্দ নয়। নয় কোনো প্রকৃতির ডাকে সম্পাদনকৃত ছোট কর্মের আওয়াজ। এটা আসলে মফিজের মোবাইলের রিংটোন! সকাল বেলায় এই অদ্ভুত রিংটোনের শব্দে আরামের ঘুম হারাম করে অত্যন্ত বিরক্ত সহকারে চোখ কচলাতে কচলাতে মফিজ তার ফোনটা রিসিভ করল। অপর প্রান্তের কন্ঠ শুনে মফিজ বুঝতে পারল এটা তার প্রেমিকা কুলসুমের নাম্বার। এত্ত সকালে প্রেমিকা কুলসুমের ফোন পেয়ে মফিজ খুশি না হয়ে খানিকটা আতংকিত হলো। মনে মনে ভাবল কোনো অঘটন ঘটেনি তো?
কিন্তু না কোন অঘটন নয়। অপর প্রান্ত থেকে কুলসুম মিষ্টি হেসে বলল ‘ঈদ মোবারক’।
কথাটা শুনে যেন মফিজের বাসার ছাদে ঝুলে থাকা সিলিং ফ্যানটা হঠাৎ ভেঙ্গে পড়ল তার মাথায়। আজ যে ঈদ এটা মফিজের খেয়াল-ই ছিল না। (বারো মাস নামাজ-রোজার খবর না রাখলে যেমনটা হয় আর কী!) তো যা-ই হোক মফিজ তড়িঘড়ি করে কুলসুমকে বলল ‘তোমাকে ও ঈদ মোবারক এবং শুভেচ্ছা’।
কুলসুম বলল, ‘শুধু ঈদ মোবারক এবং শুভেচ্ছায় কিন্তু চলবে না’।
‘কেন তোমাকে কি ঈদে অন্যকিছু দেওয়ার কথা ছিল নাকি?’ মফিজের উত্তর।
কুলসুম বলল, ‘হ্যা’।
এবার মফিজ তার গলার স্বরটা নিচু করে অনেকটা নিরীহ আদমের মতো বলল, ‘বিশ্বাস করো, আজকের দিনে তোমাকে দেওয়ার মতো একটা ছেঁড়া দুই টাকার নোট ও আমার পকেটে নাই।’
কথাটা শুনে কুলসুম খিল খিলিয়ে হেসে জবাব দিল, ‘আরে গাধা টাকা দিতে হবে না। আজ তোমাকে আমার আব্বার সাথে দেখা করতে হবে।’
‘কেন বলতো?’ মফিজ বলল।
‘কেন আবার?’ আব্বার সাথে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করার জন্য।’ বলল কুলসুম।
এবার মফিজ হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। বলল, ‘ঠিক আছে আমি সকাল ১১টার মধ্যে তোমাদের বাড়িতে আসব।’
এরপর কথামত মফিজ বেলা ১১টায় কুলসুমের বাসায় হাজির হলো।
কুলসুম মফিজকে ড্রয়িংরুমে বসিয়ে দিয়ে সে ভিতরের রুমে চলে গেল। যাবার আগে কুলসুম মফিজকে বলল; ‘শোনো, আমার আব্বা রুমে ঢুকেই তোমাকে কিছু প্রশ্ন করতে পারে। তিনি তোমার সম্পর্কে যা-ই জানতে চাইবে তুমি সবকিছু বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলবে। কেমন?’
‘কেন বাড়িয়ে বলব কেন?’ মফিজের উত্তর।
কুলসুম বলল, ‘কেননা আমার আব্বা সবসময় কথা কম কাজ বেশি টাইপের লোকদেরকে একটু বেশি পছন্দ করেন,  তাই।’
কুলসুম ভেতরের রুমে প্রবেশ করার কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎ যক্ষার রোগীর মতো কাশতে কাশতে কুলসুমের আব্বা ড্রয়িংরুমের দিকে অগ্রসর হলেন।
রুমে প্রবেশ করেই তিনি মফিজকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কেমন আছো বাবা?’
‘খু… উ… ব… বেশি ভালো’ বলল মফিজ।
কুলসুমের আব্বা: তোমার ফ্যামিলিতে কে কে থাকে?
মফিজ: বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানী, ফুফু-খালা, চাচা-চাচী…
কুলসুমের আব্বা: থাক বাবা, বাদ দাও। শুধু বলো তোমরা কয় ভাই-বোন?
মফিজ: ১০ ভাই ১১ বোন।
কুলসুমের আব্বা: তোমার বাবা কী করেন?
মফিজ: আমার বাবা একটা আধাসরকারি অফিসের বিরাট বড় ম্যানেজার।
কুলসুমের আব্বা: তুমি লেখাপড়া করেছো কোথায়?
মফিজ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করছি।
কুলসুমের আব্বা: সকালে ঈদের নামাজ পড়েছো?
মফিজ: জি, জামায়াতের সাথেই চার রাকাত ঈদের নামাজ আদায় করছি।
কুলসুমের আব্বা: (অবাক হয়ে) কয় রাকাত নামাজ পড়েছো?
মফিজ: কেন চার রাকাত।
কুলসুমের আব্বা: একটু ভেবে বলো?
মফিজ: জি, ভেবেই বলেছি। চার রাকাত নামাজই পড়েছি।
কুলসুমের আব্বা: বাবা, আমি তোমার পূর্বের সকল কথা মানলেও এই কথাটা কিছুতেই মানতে পারলাম না।
এবার মফিজ কিছুটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ল। সে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না যে ঠিক কয় রাকাত নামাজ পড়ার কথা বললে কুলসুমের আব্বা খুশি হবেন।
মফিজকে এই অবস্থায় দেখে ভেতরের দরজার আড়াল থেকে কুলসুম হাত দেখিয়ে ইশারায় ২ রাকাত নামাজ পড়ার কথা বলল।
কুলসুমের এমন ইশারায় মফিজ বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে রাগান্বিত স্বরে চেঁচিয়ে বলল, ‘তোমার কি মাথা খারাপ? দেখছো না চার রাকাতের কথা বলেও তোমার বাবাকে খুশি করাতে পারছি না! যে লোক চার রাকাতে মানছে না সে লোক দুই রাকাতে সন্তুষ্ট হবে কী করে? যত্তোসব…!!’
এরপর নামাজের হিসাব মিলাতে মিলাতে মফিজ নিজের বাসায় উদ্দেশে পা বাড়াল। আর এ দিকে মফিজের চলে যাওয়ার দৃশ্যতে শুধুই অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল কুলসুম এবং তার আব্বা!



(সমাপ্ত)
প্রথম প্রকাশ: থেরাপি, নয়াদিগন্ত (১৫ই আগষ্ট ২০১২)

valobasa

এক:
অপু ও তপু দুই বন্ধু। তারা স্কুলের দিকে হাঁটছে। এমনিতেই মেঘের দিন তারপর আবার বৈশাখ মাস। হঠাৎ করে আকাশ কালো হয়ে এলো। কিছুক্ষন পড়েই শুরু হলো ঝড়ের ভয়াবহ হুঙ্কার। সেই হুঙ্কারে পৃথিবী কাঁপতে শুরু করল। অপু ও তপু বুঝতে পারল দিনের অবস্থা খুবই খারাপ। তাই তারা দৌড়াতে শুরু করল। কিন্তু, দৌড়ালে কি হবে শুরু হয়ে গেল প্রবল ঝড়। পড়তে শুরু করল বড় বড় শিলাখন্ড। অপু ও তপু দুজনেই একটি বড় আম গাছের নিচে এসে দাঁড়াল। দিন আরো কালো হয়ে গেল। বাতাসের প্রবল ধাক্কায় আমগাছটির একটি ডাল ভেঙ্গে নিয়ে গেল। এভাবে একটানা এক ঘণ্টা তুফান চলল। তুফান থামার পর অপু ও তপু গাছের নিচ থেকে চলে এলো। তারপর আবার তারা স্কুলের দিকে হাঁটতে শুরু করল। তারা দেখতে পেল আশেপাশের সব গাছগুলো লণ্ড-ভণ্ড হয়ে গেছে। স্কুলে এসে দেখা একই অবস্থা। স্কুলে কোন ছাত্র-শিক্ষকের পাত্তা নাই। স্কুলের টিন বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। তখন তারা পুনরায় বাড়ির পথ ধরল। তপু তার বাড়ি পর্যন্ত এসে বলল, “বাড়িতে চলে যাই, আজতো আর ক্লাস হলো না।” কথাটি বলে তপু বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ল। অপুও আস্তে আস্তে হেটে বাড়ি চলে গেল।
দুইঃ
রাত্রিবেলা। অপু ভাবে সে পহেলা বৈশাখের দিন কি কি করেছিল।
পহেলা বৈশাখের দিন সকাল থেকেই অপু ও তপু দুজনেই ব্যস্ত কিভাবে তারা মেলায় একটা দোকান বসাবে। কারণ, তাদের এলাকার বট গাছের নিচে এক বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় একটি যাত্রাপালা হবে। যাত্রাপালার নাম “কারণ মাঝি”, লেখক আমি নিজেই। এলাকার এবং বাহিরের অনেক লোক এই মেলায় দোকান নিয়ে বসেছে। অপু তপুকে বলে উঠল, “বাইরের লোক এহানে দোহান দেবে, আর আমরা গেরামের ছেলে হয়ে দোহান দিতে পারুমনা, এইটা কি অয়?” তারা দুইজন অনেক বুদ্ধি-সুদ্ধি করে একটি পান্তা ভাতের দোকান খুলে বসল।
কবিমন বলে উঠেঃ
“পান্তা ভাত আর ইলিশ ভাঁজা,
একসাথে খেতে ভারী মজা।
যদি দাম হয় আরও কম,
খাওয়া চলবে হরদম।”
অনেকেই বিশ টাকা দিয়ে তাদের দোকান থেকে পেটপুরে পান্তাভাত খেয়ে গেল। সারাদিন তারা প্রায় দুইশো টাকার মত লাভ করল। তারা ভাবল এই টাকার কিছু অংশ দিয়ে তারা যাত্রাপালা দেখবে। তারা “কারণ মাঝি ” যাত্রা পালার কিছু কাহিনী শুনেছে। কিভাবে কারণ মাঝিকে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল। তারপর তাকে কি কারণে নরকের নদী পারাপারের মাঝি বানানো হয়েছিল। নাটকটিতে কারণ মাঝির কিছু রোমান্সের কাহিনীও আছে। তারা ঠিক করল নাটক দেখের পর বাকি যা টাকা থাকবে তা তারা দুজনে ভাগ করা নেবে। কিন্তু, ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস সন্ধ্যার দিকে আকাশে মেঘ জমে গেল। যাত্রাপালার পেন্ডেলের ভেতর দর্শকরা সবাই বসল। হঠাৎ সেই কালো মেঘে সারা আকাশ ছেয়ে গেল। গুড়ুম গুড়ুম শব্দে আকাশে বাজ পড়তে শুরু করল। সাথে শিলা বৃষ্টি। সবাই মেঘের এই তর্জন গর্জন দেখা পেন্ডেল ছেড়ে দৌড় দিলো। হঠাৎ প্রবল একটা বাতাসের ধাক্কায় মঞ্চের উপরের টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেল। শুরু হলো প্রবল কাল বৈশাখী ঝড়। অপু, তপু ভিজে চুপসে গেল। তারা অনেক কষ্টে বাড়ি পৌছাল।
তিনঃ
পহেলা বৈশাখের সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়েছিল কালো বৈশাখী ঝড়। তারপর থেকে প্রতি দিনই ঝড় হয়। প্রায়ই বজ্রপাত হয়। তাই, সবাই ঝড়ের আভাস পেলেই ঘরে ফিরে যায়। অপু তপু প্রতিদিনই মাঠে গোল্লাছুট খেলতে যায়। তারা দুজনেই পড়ালেখায় খুব কাঁচা। সারাদিন খেলায় মত্ত থাকে। একদিন তারা খেলাধুলা করে বাড়ির দিকে ফিরছিল। তারা একটি প্রকাণ্ড ঘুড়ি আকাশে ভাসিয়ে হাটতে থাকছিল। এমন সময় তারা অনেক দুর থেকে ভেসে আসা শো শো শব্দ শুনতে পেল। তারা তখন বুঝতে পারেনি এটা কিসের পূর্বাভাস। তারা তাদের ঘুরিতে প্রচণ্ড টান অনুভব করল। দূর থেকে ভেসে আসা শব্দটি আরো নিকটবর্তী হতে শুরু করল। তখন তারা বুঝতে পারল বাতাস বেশ জোড়ে বইছে। এই বাতাসে ঘুড়ি নিচে নামানো সম্ভব নয়। তখন তপু অপুর হাত থেকে ঘুড়ির নাটাইটি নিলো। শো শো শব্দটি একেবারে নিকটবর্তী হল। আকাশ কলো মেঘে ছেয়ে গেল। অপু বাড়ির দিকে দৌড় শুরু করল। কিন্তু, তপু! আর বাড়ির দিকে দৌড় দিতে পারলনা। কারণ, ঘুড়ির রশিটি ছিলো খুব শক্ত সুতোর। সেই সুতো তপু তার হাতে শক্ত ভাবে পেঁচিয়ে নিয়েছিল। বাতাসে ছিলো প্রবল টান। সেই বাতাস একটি কড়ই গাছকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। ঘুড়ির সাথে বাতাস তপুকেও উড়িয়ে নিয়ে গেল। সেই বাতাস তপুকে আর ফিরিয়ে দিয়ে গেলনা।
চারঃ
অনেক বছর হয়ে গেল তপু মারা গেছে। তপু মারা যাওয়ার পর অপু আর কোন সময় খেলাধূলা নিয়ে মত্ত হয়নি। অপু তখন থেকেই পড়ালেখায় মনোনিবেশ করেছিল। অপু এখন পদার্থ বিজ্ঞানে মাস্টার্সে পড়তেছে। যখনই বৈশাখ মাস আসে তখনই অপুর মনে পরে যায় তার বন্ধু তপুর কথা। তখন তার মনে এসে যায় সেই চিরচেনা, “আকাশে জমেছে মেঘ” ।

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৩

লোডশেডিংয়ের টানে, কাছে আনে!

লোডশেডিংয়ের টানে, কাছে আনে!



মেয়েটির নাম শোভা। থাকে আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে। দেখতে যতটা সুন্দরী, তার চাইতে বেশি মনে হয় অহংকারী! আসলে মেয়েটিকে এভাবে ঠাস করে অহংকারী বলে ফেলাটা হয়তো আমার ঠিক হয়নি। কিন্তু কী করব বলেন? প্রথম দেখার পর থেকে শোভার সাথে কিঞ্চিত কথা বলার কত্ত ট্রাই করলাম, অথচ সে আমাকে কোনো পাত্তাই দিলো না। আরে বাবা, আমার চেহারা-সুরত না হয় সিনেমার নায়কের মতো না হয়ে অনেকটা ভিলেনের মতো হয়েছে। তাই বলে ভিলেন চেহারার লোকেরা কি মানুষ না? তারা কি কারো সাথে মনখুলে কথাও বলতে পারবে না? এগুলো ভাবতে ভাবতে প্রায়ই আমার মনটা উদাস হয়ে যায়।
দেখতে দেখতেই চলে আসলো গরমকাল। শীতের পর যেমন গরম আসে, ঠিক তেমনি গরম আসলেই লোডশেডিং আসবে এটাই স্বাভাবিক! আর তাই তো গরম আসতে না আসতেই লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়ে গেল কয়েকগুণ। এখন দিনের ১২ ঘন্টা (কখনো বা তারও বেশি সময়) বাসাবাড়িতে কারেন্ট থাকে না। এ তো গেল শহরের কথা, গ্রামাঞ্চলে কী অবস্তা তা একমাত্র গ্রামবাসীরই মালুম! তবে যেখানেই যত ঘন্টা লোডশেডিং হোক না কেন, এ নিয়ে দেশবাসী ওরফে সাধারণ জনগণের কোনো মাথা ব্যথা নেই। সকলের দাবি একটাই; আর তা হলো- কারেন্ট তো যায় না, মাঝে-মধ্যে আসে আর কি! তবে এ নিয়ে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া নেই তা-ও কিন্তু নয়। আমার এক বন্ধু প্রায়ই বলে, বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুতের কোনো উন্নয়ন না হইলেও লোডশেডিংয়ের উন্নয়ন হইছে ব্যাপক হারে! তাই তো রাত আড়াইটার সময় ঘুম ভাঙলেও দেখি লোডশেডিং চলছে। আবার আরেক বন্ধুকে বলতে শুনি, সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌছাতে না পারলেও হারিকেনের আলো পৌছে দিয়েছে খুব সহজেই! পরের কথা ছেড়ে এবার নিজের কথায় আসি। ছোটবেলা থেকেই লোডশেডিং আমার খুব প্রিয় একটা জিনিসের নাম ছিল। কারণ একমাত্র লোডশেডিংয়ের অজুহাত দেখিয়েই স্কুলের হোমওয়ার্ক বা পড়ালেখা নিয়ে ফাঁকিবাজি করতে পারতাম। পেটে ব্যথা, মাথা ব্যথা, দাঁতে ব্যথা এসবের অজুহাতে হোমওয়ার্ক না করলে স্যারদের বেত্রাঘাত থেকে মুক্তি পাওয়াটা বেশ মুশকিল হয়ে যেতো। কিন্তু লোডশেডিয়ের অজুহাত দেখালে এক সেকেন্ডেই সব কিচ্ছা খতম হয়ে যেতো। সবাই বিশ্বাস করত যে ঘটনা সইত্য! কারণ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে নাই বা লোডশেডিং সম্পর্কে সাধারণ নলেজ নাই এমন ইনসান এই বাংলার মাটিতে হারিকেন দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না!
আমার এলাকায় মনে হয় গরমের মাত্রাটা অন্যান্য এলাকার চাইতে একটু বেশি। আর তাই তো সন্ধার পর লোডশেডিং হলে লোকজনকে হাতপাখা নিয়ে বাতাস করতে করতে রাস্তায় নামতে দেখি। মাঝে মধ্যে আমারও ইচ্ছে করে তাদের সাথে যোগ দিতে, কিন্তু শরমের কারণে রাস্তায় আর নামা হয় না। তবে রাস্তায় না নামলেও লোডশেডিং হলে ঘরে বসে থাকতে পারি না। আর তাই বাতাস এবং মশার কামড় খেতে রওনা দেই বাড়ির ছাদের দিকে। আমার ছাদে যাওয়ার পেছনে অবশ্য আরো একটা কারণ আছে। আর তা হলো- যতবারই লোডশেডিং হয় ততবারই শোভাকে ছাদের দিকে রওনা হতে দেখা যায়। আর শোভা একা একা ছাদে গেলে আমি ঘরের মধ্যে একলা বসে থাকব নাকি? তাই আমিও তার পেছন পেছন ছাদে চলে যাই। তবে একসাথে ছাদে গেলেও শোভা কখনোই নিজ থেকে আমার সাথে কোনো কথা বলে না। আবার আমি তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করলে সে খুব নিখুঁতভাবেই আমার কথাগুলো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করত। এভাবে এড়িয়ে যেতে যেতে একদিন, দুইদিন, তিনদিন করে সপ্তম দিনের মাথায় সে নিজ থেকেই আমার সাথে কথা বলার জন্য এগিয়ে এলো। এ দিন অন্যান্য দিনের চেয়ে গরমের মাত্রাটা মনে হয় একটু বেশি ছিল। আমি লোডশেডিংয়ের সময় ছাদে উঠে দেখলাম শোভা ছাদের মাঝখানে একটা শীতলপাটি বিছিয়ে বসে আছে। তখন গরমের কারণে শোভা তার ওড়না দিয়ে নিজের শরীরে বাতাস করছিল। কিন্তু এতে কি আর বাতাস লাগে? এ দিকে আমার হাতে ছিল একটা তালপাতার পাখা। এটি দেখে শোভা আমাকে মিষ্টি সুরে কাছে ডাকল। আমাকে বলল তার পাশে বসার জন্য। আমি বসার পর সে আমার হাতের পাখাটা তার হাতে দিতে বলল। আমি দিয়ে দিলাম। এর পর এটা দিয়ে সে বাতাস করতে লাগল দুজনার দিকে। সুযোগ পেয়ে আমিও তার হাতের বাতাস (সাথে মশার কামড়) খাচ্ছি এবং গল্প করে যাচ্ছি শোভার সাথে। এভাবে গল্প করতে করতে আমরা দুজন একসময় দুজনার ভালো বন্ধুতে পরিণত হলাম।
যেহেতু লোডশেডিং এখন প্রতিদিনকার সঙ্গী, তাই রুটিন করে আমরাও প্রতিদিন ছাদে উঠে গল্প করতে লাগলাম। আমাদের মাঝের বন্ধুত্বের বন্ধনটা হতে লাগল আরো গভীর থেকে গভীর। আর এর সবটাই সম্ভব হয়েছে একমাত্র লোডশেডিংয়ের কল্যানে!
প্রথম প্রকাশ: থেরাপি, নয়াদিগন্ত (১৪-০৩-২০১২)

বুদ্ধের শান্ত দুটি চোখ

বুদ্ধের শান্ত দুটি চোখ

 

এই পাপ তোমার
এই পাপ আমার
আবহমান বাংলার খন্ডে খন্ডে-
খন্ডিত ইতিহাসের নতুন পাতার।

এই পাপ আমার !
শব্দ রাশির নিরব মৌনতার নদী
ক্ষুদ্র জাতিসত্বা ধ্বংসে
সাম্প্রদায়িক সর্বনাশা কাঁমড় !

এই পাপ তোমার !
কোটালী পাড়ার রামশীল উচ্চ বিদ্যালয়
উদীচির জোৎস্নার সমুদ্র-ভাঙনের শব্দ
রামু-উখিয়ায়- বৌদ্ধ বিহারে
ধ্বংস স্তুপে পড়ে থাকা, বিষন্ন দেবতা।

এই পাপ আমার !
বিধাতার রক্তে রন্জিত আকাশ
নিথর-রজনীর আর্তনাদ
নয়নের-জলে জ্বলসে ওঠা
ধরিত্রীর নির্মম আঘাত।

এই পাপ তোমার
অতিক্রুদ্ধ জাগোর সূর্যের
জ্বালনালী বিস্ফোরনের মত বিস্ফোরন
দেবতার মুন্ড হাতে, বয়সিনীর বিলাপ

এই পাপ আমার
চিন্হহীন ধ্বংসযঙ্ঘের বৌদ্ধ বিহার
অবিদিত বেদনার, নির্মম কবিতা
সুর্যাস্তের অগ্নি-প্রবল রাত্রি।

এই পাপ তোমার
বুদ্ধের মুর্তির শান্ত দুটি চোখ
চেয়ে আছে নির্বাকে
দগ্ধতার স্পর্শে – লজ্জিত মহাসাগর


এই পাপ তোমার
এই পাপ আমার
এই পাপ ষোল কোটি বাঙালীর
আশ্রমের ভূখল জানোয়ার
সন্ধা-কাশের চির-কালপুরুষ
অশ্রুমোচনের ক্লান্ত দীর্ঘশ্বাস।

সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৩

ভালবাসা এবং একটি প্রতিজ্ঞা

ভালবাসা এবং একটি প্রতিজ্ঞা

শুনেছি প্রেমে পড়লে মানুষ গরু, ছাগল, গাধা, ভেড়া আরো কত্ত কি হয়! তবে আমি কিন্তু এগুলোর একটিও হইনি। কারণ, আমি তো এখনো প্রেমেই পড়িনি! তো প্রেমে না পরার পেছনে বড়-সড় তেমন কোনো কারণ না থাকলেও ছোটখাটো ১টা কারণ অবশ্যই আছে। আর তা হলো আমি এবং আমার এক বন্ধু দুজনে মিলে একটা যৌথ প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে, জীবনে যত কিছুই করি না কেন আমরা কখনো প্রেম করব না। বন্ধুটি অবশ্য একজনের কাছ থেকে বিশাল টাইপের এক ছ্যাঁকা খেয়ে এরূপ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর আমি…? তেমন কিছুই না। আসলে বন্ধুর মুখ থেকে ভালোবাসার বিরুদ্ধে ভারী ভারী সব ডায়লগ শুনতে শুনতে এত্ত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলাম! অবশ্য আমি কিন্তু আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারিনি। কারণ, আমি আবার দুই কথার লোক! অর্থ্যাৎ, সকালে এক কথা বললে বিকেলে আরেক কথা বলে ছাড়ি! বিশেষ করে আমি যা বলি তা না করতেই বেশি আনন্দ পাই! তো প্রতিজ্ঞা ভঙ্গের প্রধান কারণই ছিল প্রেম। একদিন কোত্থেকে যেন প্রেম নামক এই বস্তুটা উড়ে এসে ধপাস করে আমার মনে বাসা বাঁধল। হঠাৎ করেই আমার ক্লাশে পড়ুয়া এক মেয়েকে আমার ভালো লাগতে শুরু করল। আর এই ভালো লাগাই যে ভালোবাসা তা আজকাল ফিডার খাওয়া শিশুরাও জানে। তো যাই হোক, মাত্র কয়েক দিনের পরিচয়েই আমি মেয়েটার প্রেমে একেবারে দিওয়ানা হয়ে গেলাম। আমি রীতিমত তার প্রেমের স্যুইমংপুলে ডুবে ডুবে জল খাওয়া আরম্ভ করে দিলাম! এখন দিন-রাত ২৪ ঘন্টা আমার মনটা সিলিংফ্যানের মত তার পেছনে ঘুরঘুর করতে লাগল। আমার ধারনা মেয়েটাও আমার প্রেমের সাগরে গড়াগড়ি দিতে শুরু করেছে। কারণ, তার আচার-আচরণ আর ভাষা-ব্যাকরণে আমি এমনটাই যে আভাস পাচ্ছিলাম! এমন পরিস্থিতিতে আমার জয়গায় এখানে অন্য কেউ হলে হয়তো তার ভালোবাসার মানুষের জন্য এতদিনে নতুন কোনো গান আবিষ্কার করে ফেলতেন। আমিও  গান গাইতে চেয়েছিলাম কিন্তু গলার যে বেহাল দশা তাতে করে এত্ত বড় রিস্ক নেওয়ার সাহস পাইনি! যাই হোক, এতটা দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও  আমি তাকে আমার মনের কথাটা খুলে বলতে পারিনি। আর যেহেতু মেয়েরা ‘বুক ফাটে তবুও মুখ ফোটে না’ নীতিতে বিশ্বাসী তাই ওর কাছ থেকে আগে অফার পাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

তো এভাবে আর কত? ভাবলাম মুখে না হোক অন্তত  চিঠি লিখে হলেও তাকে আমার মনের কথাটা জানানো উচিত। যেই ভাবা সেই কাজ। তবে চিঠিটা লিখতে একটু লেট হয়ে গিয়েছিল। কারণ, আমি চিঠি লেখার আগেই একদিন রাতে সে আমাকে ফোন করল। (এ যেন মেঘ না চাইতেই শিলা, বৃষ্টি, বজ্রপাত আরো কত্ত কি!) সে বলল, ‘সুমন তোমার সাথে আমার জরুরি কথা আছে’। আমি বললাম, ‘কি কথা বলো’? সে বলল, ‘মোবাইলে বলতে পারব না। সামনা-সামনি বলতে হবে। তুমি কাল সকালে আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবে’? জবাবে আমি কি আর না বলতে পারি! বললাম পারব। তারপর স্পটের নাম বলেই সে ফোন রেখে দিলো। সেদিন তার কথা ভাবতে ভাবতেই আমি সারাটা রাত পার করে দিলাম।

দুই.
কাল সাতটা বাজে। আমি জীবনেও এত সকালে ঘুম থেকে উঠি নাই! তবে আজ উঠেছি শুধুমাত্র তার সাথে দেখা করার জন্য। ঘুম থেকে উঠেই ফ্রেশ হয়ে সেজে-গুজে তার সাথে দেখা করার জন্য রওনা দিলাম। পথে এক ফুলওয়ালার কাছ থেকে অনেক রিকোয়েস্ট করে ৫ টাকার ১টা আধমরা গোলাপ ৩ টাকায় কিনতে সক্ষম হলাম। (আফ্‌টার অল প্রেম-ভালোবাসার বিষয় ফুল ছাড়া খুব একটা জমে না কিনা!) এরপর ফুলটা প্যান্টের পকেটে রেখে তার সমনে উপস্থিত হলাম। ভাবলাম সে যখনই ‘আই লাভ ইউ’ বলবে তখনই ফুলটা বের করে তাকে দিব। আর এই উদ্দেশ্যে আগেই নিজের ডান হাতটা পকেট বরাবর রেডি করে রাখলাম। কিন্তু আফসোস্‌! সে আমাকে ভালোবাসার কথা বলার জন্য এখানে ডাকেনি। ডেকেছে আমার কাছ থেকে কিছু টাকা ধার চাওয়ার জন্য! মোবাইলে টাকা ধার চাইলে হয়ত আমি নানান বাহানা তৈরি করে ফেলতাম, এটা ভেবেই মনে হয় সে মোবাইলে টাকা ধার না চেয়ে এভাবে সরাসরি আমাকে এমন বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র করেছে। উপায় না দেখে অবশেষে প্রেস্টিজ পাংচারের ভয়ে পকেট থেকে ৫০০ টাকার ১টা কড়কড়ে নোট বের করে ওর হাতে দিলাম। টাকা হাতে নিয়ে সে বলল, ‘তুমি রাগ করনি তো’? তখন বুক ভরা হাহাকার থাকা সত্ত্বেও ঠোঁট দুটি কিঞ্চিত বাঁকা করে মুখে হাসির ভাব ফুটিয়ে বললাম, ‘আরে না রাগ করব কেন’? ‘আরো লাগলে তুমি আমাকে বলো’ এটাও বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু যদি সত্যি চেয়ে বসে এই ভয়ে কথাটা আর মুখ থেকে বের করিনি!
সেই দিনটি ছিল ১৩ই ফেব্রুয়ারি। ভাবলাম পরেরদিন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এদিন মানুষ তার ভালোবাসার মানুষের জন্য কত কিছুই তো করে। আর আমি না হয় আজ আমার ভালেবাসার মানুষের জন্য এই ৫০০ টাকাই বিসর্জন দিলাম। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ইতিমধ্যেই সে আমার কাছ থেকে বিদায় নিলো। সাথে নিয়ে গেল আমার দেওয়া ৫০০ টাকা কড়কড়ে নোটটি! অন্যদিকে আমার পকেটে রয়ে গেল আধমরা সেই লাল গোলাপটি। সে যতক্ষনে গেল, ততক্ষনে আমার এই আধমরা গোলাপটি পুরোই মৃত ঘোষিত হলো! ইন্নালিল্লাহে… রাজেউন!!

তিন.
জ ১৪ই ফেব্রুয়ারি। অর্থাৎ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। হঠাৎ করেই প্রিয়ার (ভালোবাসার মানুষ) সাথে আমার দেখা হয়ে গেল। দেখা হতেই সে নিজ থেকে গতকালের টাকা ধার দেওয়ার জন্য আমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাল আর বলল, কেন টাকা ধার নিয়েছিলাম তা জনতে চাইলে না?  যদিও আগ্রহ নেই তবুও বললাম, কেন নিয়েছ? বলল, আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে একটা ফতুয়া গিফট করার জন্যই টাকাটা ধার নিয়েছিলাম! কথাটা শোনা মাত্রই যেন মনে মনে খুশিতে লাফ দিয়ে আমি মাটি থেকে প্রায় ২ ফুট উপরে উঠে গেলাম! (আমি আবার লাফা-লাফিতে প্রচন্ড রকমের দুর্বল। যদি সবল হতাম তাহলে এতদিনে অলিম্পিক গেমসে নাম লিখিয়ে বাংলাদেশের জন্য কয়েকটা সোনার মেডেল আনার ব্যবস্থা করে ফেলতাম না!) যেহেতু আমার ধরণা ছিল যে, প্রিয়ার ভালোবাসার মানুষ একমাত্র আমিই। তাই এতটা খুশি হয়েছিলম আর কি! অতঃপর বললাম, তা ফতুয়া কি কেনা হয়েছে? সে বলল, অবশ্যই এবং সেটি তাকে দিয়েই তো বাসায় ফিরছি। এবার আমি কিছুটা অবাক হয়ে বললাম, তাকে… মানে কাকে? জবাবে সে বলল, তোমার বন্ধু আরিফ! এই কথা শুনে আমি অবাক হবো না কি হবো এটা বুঝে ওঠার আগেই প্রিয়া বলল, আরিফ আজ বিকেলে আমাকে চাইনিজ খাওয়াবে। তুমি কি আমাদের সাথে যেতে পারবে? মুখে বললাম, না কাজ আছে। আর মনে মনে বললাম, শালা ভাবলাম কি আর হইলো কি? ব্যাটা নিজেই নিজের প্রতিজ্ঞা ভেঙে বসে আছে! এখন তোদের সাথে চাইনিজে গিয়ে আমার কোনো লাভ নেই। শেষে যদি দুজনে আবেগের বসে আমাকেই খাওয়ার বিল দিতে অনুরোধ করে তবে আমি চোখে সর্ষে, সূর্যমুখী ছাড়াও আরো কত্ত যে বাহারি রকমের ফুল দেখব তার কোনো ইয়াত্তা নেই! ভালোবাসা পাইনি তো কি হয়েছে ভবিষ্যতে পাবো; কিন্তু টাকা খরচ হলে তা আর পাওয়া যাবে না! সেদিন এত্ত বড় একটা শক্‌ খাওয়ার পরও আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েনি। তবে নিজের মাথায় অন্যের কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার হালকা আভাস যে পাইনি তা কিন্তু নয়। সাথে পেয়েছিলাম হৃদয় পোঁড়ানোর কিঞ্চিত দুর্গন্ধ! এ ঘটনার পর আমি মনে মনে শুধু এতটুকুই চেয়েছি, প্রিয়া যেন আমার পাওনা টাকা সময়মত শোধ করে দেয়। নয়তো আমি আম আর ছালা তো বটেই সাথে বড়া আর খোসাও হারাবো!
অতঃপর আমি আবার আমার সেই চিরচেনা প্রতিজ্ঞা করলাম যে, জীবনে যত কিছুই করি না কেন আর কখনো প্রেমের পথে পা বাড়াবো না। তবে এবারো আমি আমার এই প্রতিজ্ঞায় পুরোপুরি অটল থাকতে পারব কিনা এ ব্যপারে কোন গ্যারেন্টি নেই। কারণ, চোখ যেহেতু আছে সেহেতু আবারো যেকোনো সময় যে কাউকে ভালো লাগতেই পারে! পাঠক, আপনারা কি বলেন?
প্রথম প্রকাশ : নয়াদিগন্ত, ২০১০

** ছোট্ট এক প্রেম কাহিনী **

** ছোট্ট এক প্রেম কাহিনী **


দুই প্রজাপতি একজন আরেকজনকে খুব ভালোবাসতো। তাদের মাঝে প্রায়ই তর্ক হতো যে কে কাকে বেশি ভালোবাসে। যাই হোক, একদিন তারা দুজনে একটা বাজি ধরল। বাজির শর্ত ছিল, তারা যেই বাগানে থাকে সেই বাগানের সবচেয়ে সুন্দর ফুলটার উপর একদম সকালে যে আগে বসতে পারবে সেই অন্যজনকে বেশি ভালোবাসে! মেয়ে প্রজাপতিটা রাতে আর ঘুমাল না। সে শুধু ভাবতে লাগলো। ঘুমিয়ে পড়লে যদি ছেলে প্রজাপতিটা আগে চলে যায়!
খুব সকালে মেয়ে প্রজাপতিটা তাড়াতাড়ি বাসা থেকে বের হয়ে উড়তে উড়তে সবচেয়ে সুন্দর ফুলটার কাছে গেল। তখন ছিল একদম ভোরবেলা। চারিপাশে আলোও ফুটেনি। সে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো কখন সকাল হবে আর ফুলটা ফুটবে! এরপর সকাল হলো। সূর্যের প্রথম কিরণ সেই বাগানের সবচেয়ে সুন্দর ফুলটার উপর পড়লো। আর মেয়ে প্রজাপতিটা গভীর বিস্ময়ে দেখলঃ
ছেলে প্রজাপতিটা সেই ফুলের মধ্যে বসে আছে। তার দেহে প্রান নেই। আসলে, মেয়েটাকে সকাল বেলা চমকে দেয়ার জন্য সে গত রাত থেকেই ফুলটার মধ্যে ঢুকে ছিল। রাতে যখন ঠাণ্ডা খুব বেড়ে যায় তখন সে ঠাণ্ডায় কাবু হয়ে মারা যায়। আর এজন্য সে মরে ফুলের মধ্যেই পরে থাকে। সে চেয়েছিল নিজের প্রিয়তমাকে চমকে দিতে! কিন্তু পারেনি।
অন্যদিকে মেয়ে প্রজাপতিটি এই দৃশ্য সহ্য করতে পারলো না। সে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে।

** মূলকথা : ভালোবাসা আসলে এমনই হয়। এটি যেমন আমাদের বাঁচতে শেখায়, ঠিক তেমনি আবার মাঝে মাঝে অনেক বেশি দুর্বল করে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।।


গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লাগবে জানি না। আমার কাছে ভালো লাগলো তাই শেয়ার করলাম। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

** ছোট্ট এক প্রেম কাহিনী **

** ছোট্ট এক প্রেম কাহিনী **


দুই প্রজাপতি একজন আরেকজনকে খুব ভালোবাসতো। তাদের মাঝে প্রায়ই তর্ক হতো যে কে কাকে বেশি ভালোবাসে। যাই হোক, একদিন তারা দুজনে একটা বাজি ধরল। বাজির শর্ত ছিল, তারা যেই বাগানে থাকে সেই বাগানের সবচেয়ে সুন্দর ফুলটার উপর একদম সকালে যে আগে বসতে পারবে সেই অন্যজনকে বেশি ভালোবাসে! মেয়ে প্রজাপতিটা রাতে আর ঘুমাল না। সে শুধু ভাবতে লাগলো। ঘুমিয়ে পড়লে যদি ছেলে প্রজাপতিটা আগে চলে যায়!
খুব সকালে মেয়ে প্রজাপতিটা তাড়াতাড়ি বাসা থেকে বের হয়ে উড়তে উড়তে সবচেয়ে সুন্দর ফুলটার কাছে গেল। তখন ছিল একদম ভোরবেলা। চারিপাশে আলোও ফুটেনি। সে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো কখন সকাল হবে আর ফুলটা ফুটবে! এরপর সকাল হলো। সূর্যের প্রথম কিরণ সেই বাগানের সবচেয়ে সুন্দর ফুলটার উপর পড়লো। আর মেয়ে প্রজাপতিটা গভীর বিস্ময়ে দেখলঃ
ছেলে প্রজাপতিটা সেই ফুলের মধ্যে বসে আছে। তার দেহে প্রান নেই। আসলে, মেয়েটাকে সকাল বেলা চমকে দেয়ার জন্য সে গত রাত থেকেই ফুলটার মধ্যে ঢুকে ছিল। রাতে যখন ঠাণ্ডা খুব বেড়ে যায় তখন সে ঠাণ্ডায় কাবু হয়ে মারা যায়। আর এজন্য সে মরে ফুলের মধ্যেই পরে থাকে। সে চেয়েছিল নিজের প্রিয়তমাকে চমকে দিতে! কিন্তু পারেনি।
অন্যদিকে মেয়ে প্রজাপতিটি এই দৃশ্য সহ্য করতে পারলো না। সে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে।

** মূলকথা : ভালোবাসা আসলে এমনই হয়। এটি যেমন আমাদের বাঁচতে শেখায়, ঠিক তেমনি আবার মাঝে মাঝে অনেক বেশি দুর্বল করে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।।


গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লাগবে জানি না। আমার কাছে ভালো লাগলো তাই শেয়ার করলাম। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

** ছোট্ট এক প্রেম কাহিনী **

** ছোট্ট এক প্রেম কাহিনী **


দুই প্রজাপতি একজন আরেকজনকে খুব ভালোবাসতো। তাদের মাঝে প্রায়ই তর্ক হতো যে কে কাকে বেশি ভালোবাসে। যাই হোক, একদিন তারা দুজনে একটা বাজি ধরল। বাজির শর্ত ছিল, তারা যেই বাগানে থাকে সেই বাগানের সবচেয়ে সুন্দর ফুলটার উপর একদম সকালে যে আগে বসতে পারবে সেই অন্যজনকে বেশি ভালোবাসে! মেয়ে প্রজাপতিটা রাতে আর ঘুমাল না। সে শুধু ভাবতে লাগলো। ঘুমিয়ে পড়লে যদি ছেলে প্রজাপতিটা আগে চলে যায়!
খুব সকালে মেয়ে প্রজাপতিটা তাড়াতাড়ি বাসা থেকে বের হয়ে উড়তে উড়তে সবচেয়ে সুন্দর ফুলটার কাছে গেল। তখন ছিল একদম ভোরবেলা। চারিপাশে আলোও ফুটেনি। সে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো কখন সকাল হবে আর ফুলটা ফুটবে! এরপর সকাল হলো। সূর্যের প্রথম কিরণ সেই বাগানের সবচেয়ে সুন্দর ফুলটার উপর পড়লো। আর মেয়ে প্রজাপতিটা গভীর বিস্ময়ে দেখলঃ
ছেলে প্রজাপতিটা সেই ফুলের মধ্যে বসে আছে। তার দেহে প্রান নেই। আসলে, মেয়েটাকে সকাল বেলা চমকে দেয়ার জন্য সে গত রাত থেকেই ফুলটার মধ্যে ঢুকে ছিল। রাতে যখন ঠাণ্ডা খুব বেড়ে যায় তখন সে ঠাণ্ডায় কাবু হয়ে মারা যায়। আর এজন্য সে মরে ফুলের মধ্যেই পরে থাকে। সে চেয়েছিল নিজের প্রিয়তমাকে চমকে দিতে! কিন্তু পারেনি।
অন্যদিকে মেয়ে প্রজাপতিটি এই দৃশ্য সহ্য করতে পারলো না। সে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে।

** মূলকথা : ভালোবাসা আসলে এমনই হয়। এটি যেমন আমাদের বাঁচতে শেখায়, ঠিক তেমনি আবার মাঝে মাঝে অনেক বেশি দুর্বল করে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।।


গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লাগবে জানি না। আমার কাছে ভালো লাগলো তাই শেয়ার করলাম। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

এক বিকেলে ললনা’র পিছে…

এক বিকেলে ললনা’র পিছে…

নিয়মিত কলেজে যাওয়া-আসা করলেই যে ভালো ছাত্র হওয়া যায় না, আমিই তার বাস্তব উদাহরণ! পড়ালেখায় ততটা ভালো না হলেও কোনো দিন কলেজে যাওয়া মিস করিনি। শুক্রবার এমনকি যেকোনো সরকারি ছুটির দিনেও আমি কলেজ প্রাঙ্গনে উপস্থিত থাকতাম! এর মানে এই নয় যে, স্যারদের লেকচার বা বন্ধুদের কাছ থেকে নোট সংগ্রহ করার জন্য কলেজে যেতাম। মূলত ভাব মারার জন্যই প্রতিদিন একবার হলেও কলেজ পাড়ায় উঁকি দিয়ে আসতাম! তো রোজকার মত একদিন শুক্রবারেও কলেজে গেলাম। গিয়ে দেখলাম কলেজের প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। আর তাই কলেজে না ঢুকতে পেরে কলেজের পাশে ফুটপাতের এক দোকান থেকে চা খেয়ে সেখান থেকেই বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সেদিনের আবহাওয়া ছিল অনেকটা মেঘলা টাইপের। আর তাই বাসার দিকে অল্প কিছু পথ পাড়ি দিতে না দিতেই দুর্যোগের ঘনঘটার সম্মুখীন হলাম। অর্থাৎ মেঘ না চাইলেও তখন বৃষ্টির এসে হাজির। অবশ্য এর জন্য আমাকে খুব একটা বেগ পোহাতে হয়নি। কারণ আমার কলেজ ব্যাগে বই-খাতার কোনো চিহ্ন না থাকলেও সবসময়ই একটা ছাতা উপস্থিত থাকত। কাজেই মেঘের আভাস পাওয়ার সাথে সাথে ছাতাটা আগেই মাথার ওপর তুলে ধরলাম। অতঃপর ছাতা মাথায় কয়েক পা সামনে যেতে না যেতেই এক রোমান্টিক দৃশ্য দেখার সুযোগ পেলাম! দেখলাম আমার সামনে দিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে এক তরুনী হেঁটে যাচ্ছে। মেয়েটির চেহারা সামনাসামনি না দেখলেও সে যে বিরাট সুন্দরীই হবে এতে আমার কোনো সন্দেহ নেই। কারণ তার গায়ের লাল রঙের ফতুয়া, মাথার দিঘল কালো কেশ, কানের দুল, হাতের বালা আর বৃষ্টি ভেজা শরীর দেখেই মেয়েটির সৌন্দর্য অনুমান করা যাচ্ছিল। আবার দেখলাম হাঁটার সুবিধার্থে মেয়েটি তার পায়ের জুতা গুলো খুলে হাতে নিয়ে নিজের কোমড় দুলাতে দুলাতে হাঁটছে। যা আমার চোখে শুধু সুন্দরই নয়, বহুত অপূর্ব লাগছে! এখন ঠিক করলাম, যে করেই হোক আমাকে ওই মেয়ের চেহারাটা একবার দেখতেই হবে। তো কথা না বাড়িয়ে আমি দ্রুত মেয়েটির পিছে পিছে হাঁটা ধরলাম। কিন্তু একি! মেয়েরা যে এত জোরে হাঁটতে পারে তা আমার জানা ছিল না। (আর জানা থাকবেই বা কী করে? পূর্বে কোনো দিন এভাবে কোনো মেয়ের পিছু নেওয়ার অভিজ্ঞতা নেই কিনা!) এরপর আস্তে আস্তে উপলদ্ধি করতে লাগলাম, আমি এক পা এগুলেই মেয়েটি আমাকে দুই পা পেছনে ফেলে আগে চলে যাচ্ছে! এ দিকে ভেজা পায়ে দ্রুত হাঁটার কারণে আমার পা বার বার স্লিপ কাটছে। যার ফলে উপায় না দেখে আমিও মেয়েটির মত নিজের জুতাগুলো পা থেকে খুলে হাতে নিয়ে নিলাম। এরপর জুতাগুলো বগলতলে নিয়ে আবারো মেয়ের পেছনে হাঁটা ধরলাম। কিন্তু হায়…! খালি পায়ে যখন দুই কদম সামনে গেলাম তখন মনে হচ্ছিল আমি বুঝি সীতার অগ্নিপরীক্ষা দিচ্ছি! সেদিনই প্রথম আমার পা মাটিতে পড়েছিল। এখন আপনারা হয়তো ভাবছেন আমি ভীষণ অহংকারী টাইপের একজন মানুষ! এ কারণেই বোধহয় আজকের আগে কোনো দিন আমার পা মাটিতে পড়েনি, তাই না? আসলে ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। ছোটবেলা থেকেই আমার ভীষণ স্যান্ডেল পরার অভ্যাস ছিল। আর এ কারণেই আমার পা আজীবন স্যান্ডেলের ওপরই পড়েছে। এজন্যই বললাম, আমার পা আগে কখনো মাটিতে পড়েনি!
যাই হোক, পিচঢালা রাস্তায় নিজের পা পড়তেই ব্যথায় গরম হয়ে আমার পা দুটি লাল হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে এক্ষুনি বুঝি ফোসকা পড়ে যাবে পায়ে। উপায় না দেখে বাধ্য হয়েই বগলের তল থেকে নামিয়ে জুতাগুলো আবার পায়ে পড়ে নিলাম। এরপর যথারীতি হাঁটা শুরু করলাম মেয়েটির পিছু পিছু। প্রায় মিনিট পাঁচেক হাঁটার পর দূর থেকে দেখলাম মেয়েটি রাস্তার পাশে ফুটপাতের এক চায়ে দোকানে ঢুকল। ভাবলাম বৃষ্টিতে ভিজে মেয়েটির শরীর হয়তো ড্যামেজ… মানে ঠান্ডা হয়ে গেছে তাই বোধহয় সে শরীরটা একটু চাঙা করার জন্য চা খেতে দোকানে ঢুকেছে। আর তাই দেরি না করে আমিও দ্রুত মেয়ের পেছন পেছন দোকানে ঢুকে গেলাম। কিন্তু এবারও আমি চেহারা না দেখে কেবল মেয়ের পেছন সাইডটাই দেখার সুযোগ পেলাম। সে আমাকে পেছন ফেলে দোকানদারের সাথে কথা বলছে। আর এ দিকে আমি এক নজরে তাকিয়ে আছি মেয়ের দিকে সে দোকান থেকে কী কিনছে এটা দেখার জন্য এবং মনে মনে অপেক্ষা করছি মেয়েটি দোকানদারের কাছ থেকে ঘুরে কখন পেছন ফিরে আমার দিকে তাকাবে এর জন্য। আমি অবাক হলাম তখন যখন দেখলাম মেয়েটি টাকা দিয়ে দোকানদারের কাছ থেকে দুটি বেনসন সিগারেট কিনল!
সে যাই হোক, মনকে এই বলে সান্ত্বনা দিলাম যে, ‘আধুনিক মেয়ে তো তাই তাদের ৯৯% ভালো শুধু ১% খারাপ আরকি’! আর তার ১% খারাপটাই হলো এই সিগারেট খাওয়া। মনে হয় ছেলেদের সাথে পাল্লা দিয়ে সমান অধিকার কায়েম করার জন্যই আজকালকের মেয়েরা সিগারেট খায়! তো আমি এসব ভাবতে ভাবতে দেখলাম মেয়েটি দোকানদারের কাছ থেকে সিগারেট কেনা শেষ করে পেছন দিকে অর্থাৎ, আমার দিকে ফিরল। দীর্ঘ সময়ের প্রতিক্ষার পর অবশেষে আমি তার চেহারা মোবারক প্রদর্শনের সুযোগ পেলাম! কিন্তু একি! চেহারা দেখে যে আমি পুরাই টাশকি খেয়ে গেলাম!! যতটা শক্‌ আমি ওনার সিগারেট খাওয়ার কথা শুনে খেয়েছিলাম তারচেয়ে হাই ভোল্টেজের শক্‌টা মনে হয় এখনই খেলাম।
ভাবছেন মেয়েটির চেহারা বেশ ভয়ঙ্কর ছিল, তাই না? আরে না, ব্যপারটা আসলে সেরকম কিছু নয়।
হয়েছে কী…
মেয়ে ভেবে আমি এতক্ষণ যার পিছু নিতে নিতে এ পর্যন্ত আসলাম সে তো আসলে কোনো মেয়েই নয়! চেহারা দেখে বুঝলাম, মেয়ের বেশে ইনি আসলে ২০-২২ বছরের একজন ফ্যাশনেবল যুবক!!!

স্বপ্নবিহীন জীবনের গল্প (১)

স্বপ্নবিহীন জীবনের গল্প (১)


জীবন অনেক বড় ।জীবনের চেয়ে নাকি ভালবাসা অনেক বড় ।আমার তো মনে হয় ভালোবাসার চেয়ে আরো বেশি বড় স্বপ্ন।স্বপ্ন নিয়েই আমি বেচে আছি ।কিন্তু আমি জানি আমার স্বপ্ন সত্যি হবার নয়।তবু আমি স্বপ্ন দেখি বোকার মত।
আমার স্বপ্ন সত্যি হবার কথা ছিল ।কিন্তু সময়ের নিষ্ঠুর আঘাতে আমাকে পরাজয় মেনে নিতে হয়েছে ।আমি সবার মত জীবন পাইনি ।তবু আল্লহকে আমাকে যেমন গড়েছে আমি তাতেই হাজার শুকরিয়া জানাই ।
আমাকে দেখলে অনেকেই অবাক হয় ।দূর থেকে যারা আমাকে চেনে না বা জানে না তারা যখন আমাকে দেখে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে ।আমি একটা ঘটনা বলি ।আমি একটি পত্রিকায় কাজ করি ।একদিন পত্রিকার একজন এডিটর বলল ,কি ব্যাপার আপনি কেমন লোক ? আপনার বিল জমে থাকে অফিসে আপনি কখনো নিতে আসেন না ,ঘটনা কি ? আমি বললাম ,বিল কোন তহবিলে দিয়ে দেন ।আমার বিল দরকার নেই ।আমি আসতে পারব না ।তিনি কয়েকমাস যাবত আমাকে বিল নিয়ে যাবার কথা বলছিলেন ।আসলে তিনি আমাকে দেখতে চেয়েছিলেন-আমার ধারনা ।কিন্তু আমি তো আড়ালেই থাকতে চাই ।আমি আমার কাজ দিয়েই পরিচিত হতেএ চাই,নিজেকে চেনাতে চাই না ।তাও এডিটর নাছোড়বান্দা বলল, না আপনার বিল আপনাকে নিয়ে যেতে হবে ।এডিটর বুঝতে পারছিল আমি নিজেকে আড়ালেই রাখি ।বাধ্য হয়ে আমি বললাম,আমি আগে আপনাদের ফান ম্যাগাজিনের লেখক ছিলাম ।সেখানকার এডিটরের কাছে জেনে নেবেন ঘটনা ।তারপর ঘটনা জেনে এডিটর যেন আকাশ থেকে পড়ল ।হয়ত তিনি কল্পনায়ও কল্পনা এই নিয়েই আমি বেচে আছি,এভাবেই বেচে আছি ।ইচ্ছে করলে আমি আসতে পারতাম অফিসে ।কিন্ত আমি চাইনি আমাকে দেখে আপনি দু:খ পান ।
তারপর আমাকে সান্তনা দিতে বললেন,আপনি অনেক পজিটিভ একটা ছেলে ।আপনি এভাবে বলবেন না ।আমরা আপনার কাজ দিয়েই আপনাকে চিনি ।অন্য কিছু জানতে চাই না ।
তবু তো তিনি সান্তনা দিলেন ।

কারন আমার জীবনে সান্তনা পাওয়াটাও ভাগ্যের ব্যাপার ।আমি যখন এসএসসি এক্সাম দেবো তার আগের ঘটনা বলি ।ক্লাসের একজন টিচার ছিল আমার ।আমাকে খুব অবহেলা করত ।মানে চরম অবহেলা ।জানি না তার সাথে আমার কোন শত্রুতা ছিল কি না ।সে টিচার সারা স্কুলে বলে বেড়ালো,এই ছেলে জীবনেও এসএসসি পাস করতে পারবে না ।কারন আমি ক্লাসে রেগুলার যেতে পারতাম না ।আমি ক্লসের কার হেলপ পেতাম না ।আমাকে কেউ সাজেশন দিয়েও হেলপ করেনি ।আমি বাসায় নিজে নিজেই পড়তাম।আমার একজন প্রাইভেট টিউটর ছিল শুধু ।সে শুধু ইংরেজী পড়াতো।বাকি সব সাবজেক্ট আমি একাই পড়তাম ।এটা কিন্তু আমি একটুও বাড়িয়ে বলিনি ।কারন আমি ছোটবেলা থেকে একা একা পড়েই অভ্যাস করেছি ।অংক,ইংরেজীতে কখন আটকে গেলে আমার ভাইয়েরা দেখিয়ে দিত ঠিকই ।তবে তাদের সাথে সেভাবে    টিচারের মত পড়া হয়নি ।
আমার যিনি ইংরেজী টিচার ছিলেন তিনি অত্যন্ত ভাল মানুষ ।তার মত মানুষ আমি কমই দেখেছি ।পড়াশোনার বাইরেও তিনি আমাকে এত হেলপ করেছেন যে আমি বলে বোঝাতে পারব না ।আমি জীবনে এই একজনই টিচার পেয়েছি যিনি আমাকে কোনদিন অবহেলা করেননি ।এখনও তিনি প্রায়ই বিভিন্ন ছুতায় আমার সাথে দেখা করতে দূর থেকে ছুটে আসেন ।

যাহোক আমি আল্লাহ রহমতে  কিন্তু ফেল করিনি এসএসসিতে।আমি কোন আহামরি ছাত্র না ।কিন্তু জীবনে কখন ফেল করব না – এই চিন্তা আমার মাথায় থাকে সবসময়।এখনো আমি নিজে নিজেই ঘষামাজা পড়ি ।যা রেজাল্ট হয় তাতেই আমি খুশী ।আমি জানি আমাকে একা একাই নিজেকে নিজেই হেলপ করা শিখতে হবে ।আমি তাই করি ।
তবে ভাগ্যের কাছে আমি অনেক ফেল করেছি ।আমার জীবন অনেক সুন্দর হতে পারত আজ।আমিও সবার মত সুন্দর স্বপ্ন দেখতে পারতাম কেন তা হল না ,আমি বলব আস্তে আস্তে।আমার ফেসবুকে কয়েকজন বন্ধু আছে ।তারা সবাই আমাকে এখন জানে ।তবে অনেকেই আমার জীবনের কথাগুলো বিশ্বাস করেনি- আমার ধারনা ।বিশ্বাস না করলেই ভাল ।কারন তারা যা ভেবেছে বাস্তবতার তার চেয়েও অনেক কঠিন ।কতজন জীবন নিয়ে দু:খ নিয়ে কত কথা বলে ।আমি শুনে শুধুই হাসি ।কারন প্রকৃত দু:খ যে কি তা অনেকেই জানে না।অনেকেই জানে না জীবন কত কঠিন হতে পারে । আমি জানি ।
আমার বলতে দ্বিধা নেই আমি অনেকের চেয়ে কঠিন পরীক্ষা দিয়ে জীবনকে উপভোগ করি ।কিছু মানুষ আছে যাদের সাথে আমার দেখা হলে আমি বলব ,দেখো এখানে জীবনে আনন্দ নেই ,তবু আমি বিশ্বাসের জোরে জীবনকে উপভোগ করি,তবে তুমি কেন পার না ?
আমি বলবো আমার জীবনের স্বপ্নগুলো কেন ধূসর হয়ে গেছে ।এখনো আমি কাউকে বলিনি আমার স্বপ্নবিহীন জীবনের গল্প ।
আমার বন্ধুরা আমাকে যেভাবে চেনে বাস্তবে আমি কিন্তু সেরকম না।তাদের কাছে আমি অনেক প্রানখোলা মানুষ,কিন্তু বাস্তবে নিভৃতচারী পুরোপুরি ।আমার লেখা পড়ে অনেকের মন খারাপ হবে হয়ত।
কিন্তু সত্যকে তো অস্বীকার করা যায় না ।
জীবনের সত্যিকার জলছবিতে মন খারাপটাই বেশী থাকে ।আমার জীবনের জলছবি অনেকটাই ধূসর হয়ে গেছে ২০০৬ সালে ।(চলবে)


NahID

এত কষ্ট কেন ভালবাসায় -১

এত কষ্ট কেন ভালবাসায় -১

১.ওর নাম শ্রাবণ। শ্রাবণ চৌধুরী। ৫ ফূট ৭ ইঞ্চি ঊচ্চটা। এলাকায় ওচেণা নয় কারও। কারণ ওর বাবা। বাবা এমপি। তাই সবাই ওকে সমীহ করে । তবে ভালো ছেলে হিসাবেও ওর নাম আছে। শুধু এক জন ই ওকে এড়িয়ে চলে ।  রাত্রি । বুজতে পারে না ও। কেন ওকে এড়িয়ে চলে মেয়েটা।
অনেক বারই ওকে বলেছে ও ‘ভালোবাসি তোমায়’ । প্রতি বারই এরিয়ে গেছে রাত্রি। এক রাশ হতাশায় প্রতি বারই ভেঙ্গে পড়েছে শ্রাবণ। আর ভেবেছে কেন এমন হয়। আজ  আবার অনেক আশা নিয়ে ওর সামনে এসে দাঁড়িয়েছে ।
‘রাত্রি শোন’ ।পীচূ ডাকে ও।
‘জী ‘ । দাড়ায় রাত্রি।
‘তুমি ত জান আমি তোমাকে…।’ কথা শেষ করতে পারে না ও।
‘আমি ত আপনাকে বলেছি ,এখণ আমি এ নিয়ে ভাবছী না’ ।ওকে থামিয়ে দিয়ে বোলে রাত্রি।
‘ওকে শুধু এ টূকূ বোল আমায় ঘেণা কর না’।
‘আমি কাঊকে ঘেণা করি না’।
‘শূনে ভাল লাগল, ভাল না বাস ঘেণা ত কর না’
চলে যায় ও। পিছু চেয়ে থাকে শ্রাবণ। আন মনা হয়ে যায় ও।
দূরে দাড়িয়ে ওদের দেখছিল ওর বন্ধু রাকীব। কাছে এসে ওর পিঠে হাত রাখল ।

‘কিরে দোস্ত ,কী ব্যাপার? ‘
‘রাত্রি আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছে’ হতাশ কোণ্ঠে বোলে ও ।
‘ওকে ভালবাসিস আগে বলিসনি কেন ‘
‘কী ভাবে বলব ওতো আমাকে এড়িয়ে চলছে’ ।
‘ওটা কোন ব্যাপারই না, আমি সব মেণেজ করে দেব, তবে একটা শর্ট আছে’
‘কী শর্ট’?
‘বোল ও রাজী হলে চাইনিজ খাওয়াবী?’
‘ওকে খাওয়াবো’
‘প্রমীজ’। হাত বাড়ায় রাকীব।
‘প্রমীজ’। হাতে হাত চালীয়ে বলে শ্রাবণ।

*********

শেষ বিকেলে নূপুর পায়ে বিদায় নিচ্ছে সূর্য। কূয়াশা ণেমে আসছে । চাদর বিছিয়ে ঘিরে নিতে চাচ্ছে। কর্ম বেষ্ট সবাই ফিরে যাচ্ছে ।রাস্তায় দাড়িয়ে রাত্রির জন্য অপেক্ষা করছে রাকীব। বেশী অপেক্ষা করতে হোল না । একটা রিকশায় চেপে ওর দিকেই আসছে ও ।রাত্রি ওর ছোট বোন নীলার বান্ধবী ।আসতেই ডাক দিল ও ।
‘রাত্রি শোন’ ।
‘জী ভাইয়া’ । রিকশা দাড় করায় ও।
‘তোমার সাথে কীছূ কথা ছিল’।
‘জী বলুন’
‘তুমি ত শ্রাবণ কে চেন’।
‘জী চিনি’।
‘ও আমার ভাল বন্ধু , কিন্তু দুঃখের কথা ওর খূব অসুখ।’
‘কী হয়েছে ওনার’?
‘ওর ব্লাড ক্যান্সার ধরা পরেছে, ডাক্তার বলে দিয়েছে বড় জোড় ৬ মাস বাচবে’।
‘কী বলছেন আপণী মাএ ৬ মাস’!
‘হা ৬ মাস, তাই আমরা ওকে সব সময় খূশী রাখতে চাই’,ও তোমাকে খূব পছন্দ করে , ওকে কী কটা দিন সঙ্গ দেয়া যায়’।
‘ ভাইয়া আমি ভেবে দেখব’।
‘ওকে দেখও’।
‘আসি’ ভাইয়া’।
‘ওকে আস’।
রিকশা কুয়াশার চাদর ভিতর হারিয়ে যায় । রাকীবের চোখ খুশীতে ণেচে ঊঠে । কাল ই চলবে চাইনিজ ! আহ! কত দিন এমন সুযুক এলো !

*******************

অনেক দিন পর আজ খূব সাজতে ইচ্ছে করল রাত্রি র । কেন জানি এক ভাল লাগায় মন ভরে আছে। তাই আজ সময় নিয়ে সাজল ও। নীল শাড়ী নীল টীপে ওকে অবশরা অবশরা লাগছে। আয়নায় নিজেকে দেখে মিষ্টি হাসল ও। এক এক করে ১৮ বসন্ত কবে চলে এল বুজেইনি ও। আজ ফাগুনের ১ তারিখ তাই বুজি মণে আজ এত আমেজ!  এত ভাল লাগা ! এত আবেগ !
একটা রিকশা নিয়ে সোজা চলে এল পাড়ার ক্লাবের সামনে । ও জানে এখানেই পাবে শ্রাবণ কে। সারা দিন এখানেই আডডা দেয় ও । রাত্রি কে দেখেই ডাক দিল শ্রাবণ।
‘রাত্রি’
‘বল শ্রাবণ’।
‘রাত্রি আমি তোমাকে……।’
‘আমি জানি শ্রাবণ’। ওকে থামিয়ে বলে ও।
‘তুমি সত্যি……।’
‘হু’ম’। মাথা নাড়ায় রাত্রি।
‘ঊঠে এসো রিকশায়।’ নিমন্তন জাণায় ও। ঊঠে বসে শ্রাবণ। রিকশা এগীয়ে চলে । চূপ চাপ দুজন। যেণ ধর্মঘট ডেকেছে কেঊ! আসলে কেহই কথা খূজে পাছছে না।
‘কোথায় যাবে’? নিরাবটা ভাঙ্গে শ্রাবণ।
‘জানি না, কোথাও আজ হারিয়ে যেতে মন চাইছে!’ ভীষণ ঊছছল আজ রাত্রি!
‘তাই!’
‘হুম’।
‘সাথে আমাকে নেবে না’
‘নেব’। বলে শ্রাবণের হাত টা নিজের হাতে তুলে নেয় রাত্রি।
হঠাৎ চিৎকার করে বলে ওঠে শ্রাবণ I LOVE YOU RATRI……….
‘এই তোমার কী হয়েছে !’
‘আমি স্বপ্ন দেখছি রাত্রি ‘!
‘এখন’! হেসে উঠে ও।
‘হা’।
‘হয়েছে রাতরে দেখ!,এখন চল রমনায় যাই, আজ ফাগুনের মেলা আছে।’
‘আজ তুমি যেখানে নিয়ে যাবে যাব’, সূদু তুমি পাশে থেকো!
‘আচ্ছা থাকবো’।
রিকশা এসে থামল রমনা পার্কের সামনে। ভাড়া চূকীয়ে ভীতরে ডূকে ওরা। আজ দারুণ সাজে সেজেছে প্রকেতি । সবাই আজ জোড়ায় জোড়ায় এসেছে। তরুণীদের খোপায় শোবা পাচ্ছে ফুল।    ওরা গুরে গুরে দেখে সব সারি সারি দোকান । একটা জিনুকের দোকানের সামনে এসে দাড়ায় ওরা। শ্রাবন খুব সুন্দর দেখে একটা জিনুকের মালা কিনে দেয় রাত্রি কে। যত্ন করে রাত্রি কে পরিয়ে দেয় শ্রাবণ ।
‘কি খাবে বল?’
‘চতপতি আর ফুস্কা’।
‘তোমার খুব প্রিয় বুজি?’
‘হুম ,খুব’।
খাবার সেরে ওরা একটা জাউ গাছের নিছে এসে দাড়ায় ।  নিজেদের খুব সুখি মনে হয় ওদের ।
‘শ্রাবন আমাকে কেমন লাগছে? ‘
‘অপ্সরা’
‘দূর’
‘সত্যি!’
‘কচু! ভেংছি কাটে রাত্রি ।
‘এই ৩ সত্যি বলছি! ‘
‘হয়েছে চল এবার ,মা চিন্তা করবে ‘
‘এখনি যাবে, আরেক্তু থাক না!
‘আজ না চল’ ।
‘ওকে ম্যাম চলুন ‘।

****************************

ক্লাস শেসে সবাই ওকে গিরে ধরে। ”রাত্রি ডুবে ডুবে জল খাওয়া হছেছ?” বলে নিলা ।
‘ওমা,তাই নাকি, কে ওই হিরো টা? সবাই এক সাথে বলে উঠে।
রাত্রি চুপ করে থাকে। ওকে চুপ থাকতে দেখে নিলা বলে ”হিরো শ্রাবণ চৌধুরী”।
‘ওমা তাই নাকি’  । বাবা ত এম পি , ছেলে কি?
‘ছেলে ব্যবসাহি’
‘ভাল খুব ভাল ‘।
নিলা ও রাত্রি সবার থেকে আলাদা হয়ে কলেজের কমন রোমে এসে বসে । ‘এবার বল আমাকে না জানিয়ে ডুবে ডুবে জল খাওয়া হছছে?
‘আসলে রাকিব ভাই ও দিন বলল ,ওর নাকি খুব অসুখ তাই…’
‘এই তাহলে কাহিনি ,তুই জানিস না , রাকিব একটা মিথ্যুক, শ্রাবণ ভাইয়ের কোন অসুক নেই’
‘সত্যি!’
‘হা সত্যি!
‘ত এখন আমি কি করব!’
‘কি করবি আবার ভুলে যাবি’ ।
‘হুম’ মন খারাপ হয়ে যায় ওর।  আজ আসি নিলা ভাল লাগছে না’।
আছছা যা’
একটা রিক্সা নিয়ে সোজা চলে আসে বাসায় , নিজ রোমে ডুকে দরজা বন্দ করে দেয় ও। কান্না পাচ্ছে । ‘এখন কি করব আমি।কেন ও এমন করল! ও দূরে ছিল ভাল ছিল ! কেন কাছে এলো । নিজের সাথে রিতি মত যুদ্দ সুরু হল যেন ওর। কোথায় যেন কিছু একটা এলোমেলো হয়ে গেছে।
‘ওতো অনেক বার বলেছে, কোন ছলনা করেনি। চেয়েছে আমার ভালবাসা, আমি ই এরিয়ে গেছি । অপমান করেছি। তবুও আশা ছারেনি’ । আমাকে শুধু ভালবেসে গেছে ‘।’ওতো খারাপ ছেলে নয়,দেখতে ভাল, লাজুক’ । ‘ তাহলে কি আমি সত্যি ই ওর প্রেমে পরে গেছি ? নিজেকে অবয় দেয় ও । হা আমি ওর প্রেমে পড়েছি, ওকে ভালবেসে ফেলেছি’ ।’কোন ভুল করিনি ।ভাবতেই আনমনা হয়ে যায় । মনে মনে বলে শ্রাবণ i love you……………
****************

তবুও ভালোবাসি …

তবুও ভালোবাসি …

 
সেই ছোটবেলা থেকে তাকে আমি চিনতাম ।তখণ তো জানতাম না ভালবাসা কি ,প্রেম কি ।সে ছিলো তখন শুধুই খেলার সাথী ।
কখন যে বড় হয়ে গেলাম দেখতে দেখতে ।
একটা সময় বুঝতে পারলামআমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি ।
আমরা বন্ধুর চেয়েও বেশী কিছু ।
সে ছিলো আমার প্রথম এবং শেষ ভালোবাসা ।সবকিছু ঠিকঠাক মতই চলছিলো ।আমি জানতাম সে আমারই হবে ।
হঠাত একদিন দুর্ঘটনা…..

আমি হারালাম চলার শক্তি ।সাথে হারালাম আমার ভালোবাসা ।
আমার স্বপ্ন ।আমার সবকিছুই হারালাম ।
সে আর আমার হলো না ।আমি তার দোষ দেবো না ।
হয়তো কপালে লেখা ছিলো না ।
আমি এখনো তাকে মিস করি আগের মতই ।
এখন তুমি আমার নও
তবুও  ভালোবাসি….

♥ অপেক্ষা ♥

♥ অপেক্ষা ♥

 
 
এক ছেলে এক মেয়েকে খুব ভালবাসতো ।মেয়েটির সাথে প্রতিদিন ছেলেটির দেখা হতো ।
প্রতিদিন ঠিক সময়ে ছেলেটির সাথে পার্কে দেখা করতে যেত ।
কিন্তু ছেলেটি প্রতিদিনই দেরী করে আসতো ।মেয়েটি অপেক্ষা করতো ।ছেলেটি তারপর আসতো ।
একদিন ছেলেটি মেয়েটির আগে পার্কে পৌছে গেলো ।সেদিন মেয়েটি্এলো না ।সেদিন দেখা হলো না ।
একদিন যায়, দুই দিন যায় মেয়েটি আর এলো না ।
ছেলেটি মেয়েটির বাসায় গেলো এবং জানতে পারলো-
মেয়েটি আর মাত্র এক সপ্তাহ এই পৃথিবীতে বাচবে ।  ছেলেটি পার্কে ফিরে গেলো সেখানে যেখানে মেয়েটি তার সাথে দেখা করতে আসতো ।
খুব করে কান্না করলো এবং আত্নহত্যার সিদ্ধান্ত নিলো ।
ছেলেটি মেয়েটির উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখে গেলো-

” তুমি সব সময় আমার আগে পৌছে যেতে এবং অপেক্ষা করতে ।
আজ আমি তোমার আগে পৌছে যাবো এবং অপেক্ষায় থাকবো …. । ”

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৩

"ভালবাসার সুখ পাখি"


'নাহিদ' - সুদর্শন আর একেবারেই পাগলাটে একটা ছেলে। সারাদিন কাধে একটা গীটার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। ভার্সিটির সবাই ওকে গীটার-বয় বলেই ডাকে। নেকা মেয়ে গুলা যেন নাহিদ বলতেই অজ্ঞান। অথচ দুই চক্ষে সহ্য হয়না ছেলেটাকে আমার।

বি.বি.এ -৩য় বর্ষের ছাত্রী আমি। নাহিদ আমার ১বছর এর সিনিয়র। কোন কথাবার্তা ছাড়াই ও হঠাৎ একদিন আমকে প্রপস করে বসলো। কোন উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে গেলাম। পেছন ঘুর ঘুর করে বিরক্ত করার ছেলে ও না। কোথা থেকে যেন আমার নাম্বারটা যোগাড় করেছে। প্রতিদিন রাতে শুধু একটা করে মেসেজ করত কখনো ফোন করেনি। কোন রিপ্লাই না দিয়ে শুধু ওর মেসেজ গুলো পড়তাম প্রতিদিন। ব্যাপারটা ধীরে ধীরে ভাল লাগতে শুরু করলো। মনের আড়ালেই কখন ভাল লাগার বীজ বপন করে বসে আছি বুজতেই পারিনি।

পরপর তিনদিন ওর কোন মেসেজ না পেয়ে কেমন যেন অস্থির লাগছিল। পরদিন ভার্সিটিতে মনে মনে ওকে খুজতে থাকলাম। হঠাৎ দেখি সিমির খুব কাছাকাছি বসে ওকে গান শোনাচ্ছে। বুকের ভেতর চেপে থাকা আগুনটা যেন এবার দাউ দাউ করে জ্বলে উঠলো। নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না। কিছু চিন্তা না করেই সবার সামনে বলে দিলাম ওকে ভালবাসার কথা। সাথে সাথে একটা মুচকি হাসি দিয়ে পেছন থেকে একটা লাল গোলাপ বের করে দিল। খানিকটা অবাক হলাম। পরে জানতে পারলাম মেসেজ না করা, আমাকে জেলাস করা, পুরোটাই সাজানো ছিল। আর তার প্রধান হাতিয়ার ছিল আমার সবচেয়ে কাছের বান্ধবী সিমি। চোখের জলটা থামাতে পারলাম না। সবার সামনেই কেদে দিলাম। একটা কান্না মানুষকে এতটা সুখ দিতে পারে জীবনে প্রথম অনুভব করলাম।

শুরু হল ভালবাসার আকাশে কষ্ট সুখের সাত রঙ মিশিয়ে একি স্বপ্ন দুটি হৃদয় দিয়ে আঁকা। ও আমাকে সুখ পাখি বলে ডাকে। ওর পাগলামি গুলা যেন একি সাথে আমকে কাদাই আবার হাসাই। অদ্ভুত একটা অনুভুতি।

আমকে নিয়ে ওর গান। স্বপ্নের ভেলায় চড়ে তারার দেশে যাওয়া। হাত ধরে বৃষ্টিতে ভেজা। মাঝ রাতে আমকে দেখার নাম করে আমার বাড়ির সামনে এসে দাড়িয়ে থাকা। ক্লাস ফাকি দিয়ে মুভি দেখতে যাওয়া। একই স্বপ্ন হাজার বার ভেঙ্গে নতুন করে গড়া। সব কিছু মিলিয়ে যেন আমার একটা পৃথিবী সুখের স্বর্গ ও।

দেখতে দেখতে একটা বছর কেটে গেল। ওর বি.বি.এ শেষ হল আর আমি ৪র্থ বর্ষে উঠলাম। যে ভয়টা বুকের ভেতর সব সময় কাজ করত সেটাই হল। আমার আর নাহিদ এর সম্পর্কের কথাটা বাসাই জানা জানি হয়ে গেল।

আব্বু আম্মুর ইচ্ছের বাইরে আপু পালিয়ে গিয়ে তার ক্লাস-মেট সহেল ভাইয়াকে বিয়ে করেছিল। ওদের ৪বছর এর রিলেশন বিয়ের এক বছরের মাথাই ছাড়াছাড়ি। এ ব্যাপারটাই যেন আমার স্বাধীনতার একমাত্র ঘাতক। সাময়িক ভাবে আমার ভার্সিটি যাওয়া বন্ধ। ফোনটাও আব্বুর কাছে। এক কথায় বন্দি আমি। আপুর ব্যাপারটার পর আব্বু অনেক অসুস্থ হয়ে পরেছিল এখনো সেই ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আব্বুর ইচ্ছের বাইরে কিছু বলা মানে তাকে মৃত্যুর পথে একধাপ এগিয়ে নেয়া। কিছুই বলতে পারলাম না।

এক সপ্তাহের মধ্যে আমার বিয়ে ঠিক করলো আব্বুর ব্যবসায়ী বন্ধু রাজ্জাক আঙ্কেলের ছেলে সুমন এর সাথে। নিঃশব্দে কাদা ছাড়া কিছুই যেন করার নেই আমার।

এদিকে নাহিদ পাগল এর মত চেষ্টা করছে আমার সাথে যোগাযোগ করার। কোন উপায় না পেয়ে সিমিকে আমার বাসায় পাঠালো খোজ নেবার জন্য। মানুষটা আমাকে অন্ধের মত ভালবাসে। এত বড় অন্যায় কি করে করবো আমি। কি করে কাদাবো এই মানুষটাকে। ঠিক করলাম পালিয়ে যাব। সবাইকে ফাকি দিয়ে অনেক কষ্ট করে বাসা থেকে বেরও হলাম। কিন্তু আপুর চলে যাওয়ার পর আব্বু আম্মুর কষ্ট লজ্জা সব কিছুর ছবিটা চোখের সামনে আবারও ভেসে উঠলো। পারলাম না। একটা ফোন ফ্যাক্স এর দোকান থেকে কাদতে কাদতে নাহিদ কে সরি বলে অর্ধেক রাস্তা থেকেই আবার বাসাই ফিরে আসলাম। এসে দেখি প্রত্যাশা অনুরূপ বাসার সবাই চুপচাপ বসে আছে। যে আব্বু আমকে কোন দিন ধমক দিয়ে কথা বলিনি সে আব্বু আমার গায়ে হাত তুললো। সারা রাত কাদলাম। কান্নাই যেন একমাত্র সঙ্গী এখন। না পারছি আব্বু আম্মুকে কষ্ট দিতে না পারছি নাহিদকে কাদাতে।

পরদিন সকালে রাজ্জাক আঙ্কেল এর একটা ফোন আমার জীবনটাতে একই সাথে মুক্তি আর পঙ্গুত্ব দান করলো। ডাক্তার এর মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী আমি কোনদিন মা হতে পারবো না। বিয়েটা ভেঙ্গে গেল। কাঁদবো না মুক্তির নিঃশ্বাস ফেলব বুজতে পারলাম না। শুধু স্থব্দ হয়ে থাকলাম।

নাহিদ এর সামনে দাঁড়ানোর মত মুখ আমার নেই। সিমির মাধ্যমে ও সব কিছু জানলো। আর সব জেনে শুনেই ওর আব্বুকে দিয়ে আবারও বিয়ের প্রস্তাব পাঠাল আমার বাসাই। প্রথম বার ফিরিয়ে দিলেও এবার আর পারল না। কারণটা সহজ। আব্বু আম্মু স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা লজ্জিত হয়ে নাহিদ এর এক আকাশ সমান ভালবাসার কাছে হার মানল। পাওয়া না পাওয়াই আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের আর সুখের দিন এটা।

পরদিন নাহিদ এর অনুরোধেই আব্বু আম্মুর অনুমতি নিয়ে ওর সাথে দেখা করতে গেলাম । কথা বলার শক্তিটা যেন হারিয়ে ফেলছি। কাপতে কাপতে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।

ও কাছে এসে আমার হাত ধরে বলল- আমি শুধু তোমাকে চাই হেনা আমার আর কিচ্ছু দরকার নেই বিশ্বাস করো আমার শুধু তোমাকে হলেই চলবে। বল আমকে আর কখনো ছেড়ে যাবা নাতো ?

উত্তরে কিছুই বলতে পারলাম না। বুক ফেটে কান্না এলো। ওর এই সীমাহীন ভালবাসার কাছে আমি খুবি নগণ্য। কোথাই রাখবো ওর এতোটা ভালবাসা। কি দিয়ে শোধ করবো আমি। সুখের কান্নাটা আর থামাতে পারলাম না। চোখের সামনে থাকা স্বর্গটার দিকে তাকিয়ে অঝোরে কাদলাম। ও হাত দিয়ে চোখের জ্বল টুকু মুছে দিল।

ওকে হয়তো বাবা হবার সুখটা কোন দিনও আমি দিতে পারবো না। তবে আমার শেষ নিঃশ্বাসটা পর্যন্ত এক বিন্দু কষ্ট পেতে দিবো না ওকে। তাতে আমার মরন হলেও হাসতে হাসতে মেনে নেবো সেই মরণটাকে।

আমি ভালবাসি নাহিদ। অনেক বেশি ভালবাসি তোমাকে।
 
 
Nahid

অপ্রকাশিত একটি ভালবাসার গল্প


আমি জীবনে যে ভালবাসিনি এমন না, আমিও একদিন ভালবেসেছিলাম । অনেক ছোট থাকতে। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি । মোটামুটি দুষ্টুও ছিলাম বটে। দুষ্টামি করার সকল উপায় ভালভাবেই জানা ছিল আমার। স্কুল জুড়ে দুষ্টামিতে আমার নাম ছিল হিটলিস্টে। ক্লাস ফাকি আর স্কুল পালানো ছিল আমার খুব পছন্দের। তবে মেয়েদের ব্যাপারে ছিলাম খুবই ভদ্র। এই ধরনের দুষ্টামিতে যখন হচ্ছিলোনা, তখন বন্ধুরা বলল একটা প্রেম কর। তারপর তারা একটা মেয়েও পছন্দ করে দিল। দেখলাম মেয়েটা সত্তিই অনেক সুন্দর।বেশ লম্বা। মেয়েটাকে আমি আগেও অনেকবার দেখেছি, কিন্তু এভাবে কোনদিন ভাবিনি। সেদিন অনেক আনন্দ নিয়ে বাসায় ফিরেছিলাম। দেখলাম সারাদিন শুধু মেয়েটাকে নিয়ে ভাবছি। তখন থেকেই বুঝতে শুরু করলাম ভালবাসা কি। সেদিন রাতে ঘুম একদমই হচ্ছিলনা। পরদিন স্কুলে গেলাম, আর তাকে দেখলাম নতুন করে। মনে হল শুধু এই স্কুলে না, সে যেন পৃথীবিতে সবার চেয়ে সুন্দর। সত্তিই ভালবেসে ফেললাম তাকে। স্কুলে সবসময় তাকিয়ে থাকতাম তার দিকে। তাকে দেখলে আমার বুকে অন্যরকম একটা অনুভুতির সৃষ্টি হতো। নিজের অজান্তেই আমার মুখের কোনে অদ্ভুত একটা হাসি খেলে যেত। খুব ইচ্ছা হতো তাকে আলতো করে একটু ছুঁয়ে দিতে। কিন্তু তার মুখোমুখি হলে তার চোখের দিকে তাকাতে পারতাম না, মাথা নিচু করে ফেলতাম। আমার মনে আছে সেদিন থেকে আমি আর একদিনও স্কুল কামাই করিনি। তখন মনে হতো শুক্রবারেও ক্লাস হলে খুব ভাল হতো। দুষ্টামি একেবারেই ছেড়েদিয়েলাম। দুষ্টামিতে হিটলিস্টে থাকা ছেলেটি হটাৎ এত ভদ্র হয়ে গেলো এটা নজর এড়ালনা কারোরই, এড়ালনা তারও। ভালবাসার কথা সরাসরি বলতে পারলাম না তাকে, অবশ্য আমার অবস্তা দেখে তার একবিন্দুও বুঝতে বাকি ছিলনা, সে বাপারে আমি ছিলাম নিশ্চিত। ব্যাপারটা বললাম ওর এক বান্ধবীর কাছে, যে আমাদের এলাকাই থাকে। ও শুনে হাসল আর বলল সাকিলা সব জানে। সেদিন খুব লজ্জা পেয়েছিলাম আমি। ও দুঃখিত, মেয়েটার নাম সাকিলা। যেহেতু তখন মোবাইলের এত প্রচলন ছিলনা সেহেতু আমাদের ভেতর কথা আদান-প্রদান করে দিত তার ওই বান্ধবী। এভাবে কেটে গেল কিছুদিন, হঠাৎ দেখলাম সে একদিন স্কুলে আসতে দেরি করছে,, ভাবলাম ওতো দেরি করে স্কুলে আসেনা। ওর বাসাটা ছিল স্কুলের পাশেই, চলে গেলাম ওদের বাসার পাশে। ওখানে দেখা হল আমার এক বন্ধুর সাথে, জিজ্ঞেস করলাম শাকিলা দের বাসা কোনটা রে। যে বাসার পাশে দাড়িয়ে ছিলাম আমি জানতাম না ওটাই সাকিলাদের বাসা। সাকিলা জানালা দিয়ে বলল দাড়াও আমি আজ স্যারের সাথে সব বলে দেব। আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম কারন আমার আব্বুই স্কুলের হেডমাস্টার । ও যখন স্কুলে আসলো তখন তো ভয়ে আমার অবস্তা খারাপ। আমার অবস্থা দেখে ও হেসে ফেলেছিল সেদিন। কিন্তু ও কিছুই বলল না । আমাদের ব্যপারটা স্কুলে তখনও আমার বন্ধুদের ভেতরই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু জীবনের প্রথম প্রেম তাই নিজেকে আমি আর বেশিদিন কন্ট্রোল রাখতে পারলাম না, সবাইরে বলে বেড়াতাম। কেন জানি খুব আনন্দ লাগত সবাইকে বলতে। কেউ যদি ওর প্রশংসা করত, ওকে সুন্দর বলতো, তাহলে আমার খুব আনন্দ লাগত। অল্প কিছুদিনের মধ্যে জেনে গেল স্কুলের সমস্ত স্যার ম্যাডাম আর ছাত্ররা। আমার ছোট বোনও ওকে খুব পছন্দ করত, একদিন ভাবি বলেও ডেকেছিল। অনেক ভালবাসতাম তাকে, শুধুই বাসতাম না এখনও ভালবাসি আগের মত অনেক অনেক ভালবাসি। ওকে নিয়ে কবিতা লিখতে যেয়ে আব্বুর হাতে ধরাপড়ে মার খেয়েছি একদিন। একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে আমার সাথে ওর সরাসরি এর মধ্যে একটা কথাও বলা হয়নি। দেওয়া হয়নি ১৪ ফেব্রুয়ারিতে একটা ভালবাসার লাল গোলাপ। কখনো সামনে দাড়িয়ে চোখে চোখ রেখে বলতে পারিনি সাকিলা আমি তোমাকে আমার জীবনের চাইতেও বেশি ভালবাসি। আমার জীবনের একমাত্র স্বপ্ন এখন তোমাকে নিয়ে ঘর বাধা। তবু জানতাম ও আমাকে ভালবাসে। এভাবে ওকে ভালবেসে আমার প্রতিটা দিন সপ্নের মতই সুন্দর কাটছিল। কিন্তু ভালবাসা সবার জন্য না এই সত্যটা প্রমানিত করার জন্য বাস্তবতা আমার এতদিনের সাজানো সপ্নকে এক রাত্রেই ভেঙ্গে দিল। আমাকে করে দিল খুব একা । প্রতি বৃহস্পতিবারের মত কোন এক বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে ফেরার সময় হলো মন খারাপ যে তাকে একটা দিন দেখতে পারবনা। শনিবার স্কুলে গেলে কিছু মেয়ে আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বললো সাকিলা বিয়ে করলো আমাদের একটু জানালও না। আমি শুনে অস্তির হয়ে গেলাম। কি করব ভাবতে পারলাম না। পরে যখন জানতে পারলাম এটা সত্যি !!!!!!! তখন মনে হল আমি অনেক চেষ্টা করেও কথা বলতে পারছিনা। ঠিক ঐদিনই খেয়েছিলাম জীবনের প্রথম সিগারেট। তারপর এমনও সময় গেছে একটানা ৪-৫ দিন সূর্যের আলো দেখিনি। একাকী একটা ঘরে তাকে নিয়ে আমার লিখা কবিতা গুলো পড়তাম। কারও সাথে মিশতাম না, সবসময় একা থাকতাম। অবশ্য এর জন্য তার কোন দোষ নেই। ওইদিন তার ফুফুকে দেখতে এসে তাকে পছন্দ করে ফেলে বরপক্ষ। ঘটনাক্রমে তার আব্বুও রাজি হয়ে যাই। শুনেছি সে নাকি অনেক কেঁদেছিল ওইদিন, কিন্তু কেও শোনেনি তার ওই কান্না। অবশ্য প্রতিবেশীরা অনেক বুঝিয়েছিল তার আব্বুকে। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। শুনেছিলাম ছেলেটা খুব ভাল পরিবারের এবং ভাল একটা চাকরী করে। তায়ই হয়তো সুযোগটা হাতছাড়া করেনি। তবে ও ঠিকই ভালবেসেছিল আমাকে। ওর বিয়ের তিনদিন পর আমাকে অবাক করেদিয়ে ও স্কুলে এসে আমাকে ডেকে পাঠাল একটা ক্লাস রুমে, আমি যেয়ে দেখি শুধু ও আর ওর বান্ধবী। আমরা তিনজনই চুপকরে আছি, হঠাৎ ও বলল আমি একেবারে চলেএসেছি আমাকে বিয়ে করতে পারবে??? আমি এই কথাটার কোন সঠিক উত্তর খুজে পেলাম না। নিজের অজান্তেই বলে ফেললাম না। নিজের কণ্ঠস্বর শুনে নিজেই চমকে উঠেছিলাম সেদিন। যাকে এত ভালবাসি তাকে এভাবে ফিরিয়ে দিলাম!!!!!!!! না কথাটা বলেই মাথাটা নিচু করে নিয়েছিলাম। একদিকে আমার চোখের জল যেন না দেখতে পায়, আর তার সামনে মাথা উঁচু করার মত সাহস সেদিন আমার ছিলনা, তাই সেদিন আমার না শুনে তার মুখের অবস্থা কেমন হয়েছিলো সেটা দেখতে পারিনি। জানিনা সেদিন সে আমাকে ভুলবুঝেছিল কিনা???? তবে তাকে সেদিন না বলার কারন, তার আগে এক যাইগায় বিয়ে হওয়াটা না। তখন আমি সবেমাত্র নাইনে পড়তাম, তখন আমি যদি তার কথায় রাজি হয়ে তাকে কথা দিতাম, আর যদি সে আমার দেওয়া কথাতে বুক বেধে আমার জন্য অপেক্ষা করত, তখন ওটা আরও খারাপ হতো। হয়তো আমার ছোটবেলাই না বুঝে দেওয়া কথাটার কোন মূল্য দিতনা এই সমাজ, আমার পরিবার। তারপর সে আর ফিরে যায়না তার স্বামীর কাছে। আমাদের স্কুলেই আবার পড়ালেখা করতে থাকে। দেখতে দেখতে কেটেযাই আরও অনেকদিন। প্রচণ্ড ইচ্ছা থাকা সত্তেও লজ্জায় আর আগের মতোকরে তাকাতে পারিনি তার ওই সুন্দর মুখটির দিকে। যে মুখের দিকে তাকালে একদিন আমার হৃদয় ভরে যেত। তারপর থেকে লুকিয়ে সেই মুখের দিকে তাকালে কষ্টে হৃদয়টা বের হয়ে আসতো, অদ্ভুত হাসির বদলে লাল হয়ে যেত দুই চোখ। বিষয়টা এখানেই থেমে থাকেনি। যেহেতু আমার আব্বু ছিল হেডমাস্টার সেহেতু আমার জন্যই তাকে স্কুলটা ছেড়ে পাশের একটা স্কুলে ভর্তি হতে হয়। তারপর থেকে আর কোন মেয়ের এমনকি কোন ছেলের সাথে আর বন্ধুত্ব করিনি। একা থাকতে পছন্দ করতাম একা একা ঘুরতাম। কারো সাথে মিশতাম না। অধিকাংশ সময় একা বিছানাই শুয়ে তারে নিয়ে লিখা কবিতা গুলো পড়তাম। আমার রুমে আর কাওকে ঢুকতে দিতাম না। মাধ্যমিক পাশ করে একটা কলেজে ভর্তি হলাম। সেখানে শিরিন নামের একটা মেয়েকে ভাললাগলো, কিন্তু ভালবাসতে ভয় পেতাম। অল্পকিছুদিনের মধ্যে মেয়েটা বুঝেগেল ব্যপারটা। হলো বন্ধুত্ত তারপর ভালবাসা। কিন্তু সাকিলার জাইগাটা অন্যকেও দখল করবে এটা মেনেনিতে পারিনি আমি। অবশ্য শিরিন আমাদের ভালবাসাটা গড়াতে গড়াতে অনেকদূর নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি কোনদিনই তাকে সাকিলার যাইগায় বসাতে পারিনি। নিজের হাতে নষ্ট করেছি আরেকটি ভালবাসা। এখন অবশ্য নিজেকে অনেকটা কন্ট্রোল করতে শিখেছি। নতুন করে কষ্ট পাওয়ার ভয়ে আর কোনদিন কাওকে ভালবাসতে পারিনি। তবুও এখন চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে আমাকে ভুল বুঝে ভুলে যেওনা সাকিলা, আমি এখনও তোমাকে আগের মত ভালবাসি। পাঁচবছর পর হটৎ দুইমাস আগে দেখা হয়ে গিয়েছিল ওর সাথে, কথাও হয়েছিল কয়েকটা। বুঝলাম এখনও ভালবাসে আমায়। কিন্তু কতটা সেটা বুঝার মত ক্ষমতা আমার মত অপরাধীর নেই। নিজেকে খুব অপরাধী মনে হলো তখন। আমি সত্যিই অপরাধী, তা নাহলে এমন একটা নিস্পাপ ভালবাসা থাকতে অন্যকোথাও সম্পর্ক করি কিভাবে। আমাকে ক্ষমা করে দিও সাকিলা। ভাল থেকো।।। আর জেনে রেখ আমি এখনও তোমাকে সেই নাইনে পড়া তাসিন এর মতই ভালবাসি। সে পরে বিয়ে করেছে কিনা???? না সে এখনও বিয়ে করেনি। ও ২০১৩ তে উচ্চমাধ্যমিক দেবে। 



Nahid

ওজের জাদুকর

অনেক দিন আগের কথা। আমেরিকার ক্যানসাসে বাস করত এক ছোট্ট মেয়ে। তার নাম ছিল ডরোথি। তার বাবা-মা ছিল না। সে তার খালা অ্যান ও খালু হেনরির সাথে বাস করত। টোটো নামে তার একটা কুকুরও ছিল।

একদিন কি হলো, ডরোথি আর টোটো ছাড়া সেদিন বাসায় কেউ ছিল না। এমন সময় প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় এল। সেই ঝড়ে তাদের বাড়িটাকে কোথায় উড়িয়ে নিল তারা কিছুই বুঝতে পারল না। ঝড় থামার পর তারা বাসা থেকে বেরিয়ে দেখল একটা অদ্ভুত দেশে দাঁড়িয়ে আছে।

চারপাশ দেখে ডরোথি খুব অবাক হয়ে গেল। সে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করল, আমি কোথায়? সে দেখল তার চারপাশে অনেক ছোট ছোট মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। বামন মানুষদের মধ্য থেকে সাদা চুলের এক বৃদ্ধা এগিয়ে এসে বলল, ’তুমি ওজ নামের এক দেশের পূর্ব অংশে দাঁড়িয়ে আছো। এটা মাঞ্চকিনদের বাসস্থান। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে তুমি এখানকার দুষ্ট জাদুকরকে মেরে আমাদের রক্ষা করেছ। সেজন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।
এ কথা শুনে ডরোথি খুবই অবাক হয়ে গেল। কারণ সে তো কাউকে মারেনি। সে জিজ্ঞাসা করল, কিভাবে ডাইনি মারা গেল।

বৃদ্ধা মহিলা ডরোথিকে দুটো পা দেখাল। রুপার জুতা পরা দুটো পা ডরোথির ভেঙে পড়া বাড়ির তলা দিয়ে বেরিয়ে আছে। ডরোথি বুঝতে পারল তাদের বাড়িটার তলায় চাপা পড়ে ডাইনিটার মৃত্যু হয়েছে।

ওই জুতো দুটো জাদুর জুতো। আর এখন থেকে এগুলো তোমার। সেই বৃদ্ধা ডরোথিকে ডেকে বুঝিয়ে দিল।

এবার ডরোথি নিজের পরিচয় দিল। আমার নাম ডরোথি। আপনি কে? বৃদ্ধা বলল, আমি উত্তরের ভালো জাদুকর আর আমার বোন হচ্ছে দক্ষিণের ভালো জাদুকর। আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকি। পূর্ব আর পশ্চিমে যে জাদুকররা আছে তারা হচ্ছে আমাদের শত্রু। কারণ তারা মানুষের ক্ষতি করে থাকে। তোমার জন্যই তাদের একজনের হাত থেকে বাঁচা গেল সেজন্য তোমাকে ধন্যবাদ।

কারোর উপকার করতে পেরেছে ভেবে ডরোথি খুব খুশি হলো। কিন্তু এবার তার বাড়ি ফেরার কথা মনে পড়ে গেল। সে জাদুকরকে জিজ্ঞাসা করল, আমি কিভাবে ক্যানসাসে ফিরে যাব?

ওজের জাদুকরের কাছে চলে যাও সে এমেরাল্ড শহরে বাস করে। এই মেঠোপথ ধরে এগিয়ে গেলেই তুমি তার কাছে পৌঁছতে পারবে। এ কথা বলেই বৃদ্ধ মন্ত্র পড়ে ফুঁ দিল যেন ডরোথি নিরাপদ থাকে। তারপর অদৃশ্য হয়ে গেল।

ডরোথি তাদের ভাঙ্গা বাড়ির ভেতরে গিয়ে পরিষকার জামাকাপড় বের করে পরল। তারপর টোটোকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। কিছুদূর যাওয়ার পরই তার দেখা হলো এক কাকতাড়ুয়ার সাথে। সে জিজ্ঞাসা করল কোথায় যাচ্ছ? ওজের জাদুকরের কথা শুনে সাথে সাথে সেও বায়না ধরল ডরোথির সাথে যাওয়ার জন্য। সে বলল, আমাকেও তোমার সাথে নিয়ে যাও। আমার মাথায় শুধু খড় ভরা। জাদুকরকে বলব আমার মাথায় যেন একটু বুদ্ধি দিয়ে দেয়।
ডরোথি বলল, ঠিক আছে। এই বলে কাকতাড়ুয়াকে সাথে নিয়ে নিল। কিছুদূর যাওয়ার পর তার দেখা হলো এক মজার কাঠুরের সাথে। সেই কাঠুরের পুরো শরীর টিন দিয়ে তৈরি। টিনের কাঠুরে ওদের কাছে জানতে চাইল ওরা কোথায় যাচ্ছে। জাদুকরের কথা শুনে সেও বলল, আমাকে তোমার সাথে নিয়ে চল। আমি আমার জন্য একটা হৃদয় চাইব। পূর্বের জাদুকর আমাকে জাদু করে টিন বানিয়ে ফেলেছে আমার হৃৎপিণ্ডটা নিয়ে চলে গেছে।

এমন সময় বিশাল এক সিংহ হালুম করে ওদের সামনে এসে পড়ল। সবাই সিংহকে দেখে ভয় পেয়ে গেল। কিন্তু ডরোথি একটুও ভয় পেল না বরং সে চিৎকার করে বলল, সিংহ এ ধরনের হিংস্র আচরণ ব করে চুপচাপ থাক।

সাথে সাথে সিংহ চুপ হয়ে গেল। বলল, দুঃখিত। আমি তোমাদের ভয় দেখানোর অভিনয় করছিলাম আসলে আমি খুব ভিতু। যদি ওজের জাদুকরকে পেতাম তাহলে তার কাছে একটু সাহস চাইতাম। ওরা জাদুকরের কাছে যাচ্ছে শুনে সিংহও ওদের সঙ্গী হতে চাইল। তারপর চার বু মিলে চলল জাদুকরের খোঁজে। চলতে চলতে অবশেষে ওরা অ্যামরাল্ড শহরে এসে পৌঁছল। একটা ছোট লোক তাদের অভ্যর্থনা জানালো। সেই লোকটির গায়ের রঙ সবুজ, দাড়ি সবুজ, পোশাকও সবুজ। শুধু লোকটি নয়, চারপাশের বাড়িঘর, গাছপালা এমনকি আকাশটাও সবুজ। এসব দেখে ডরোথি খুব অবাক হয়ে গেল। বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে ডরোথি সেই বামনকে বলল, আমরা ওজের জাদুকরের সাথে দেখা করতে এসেছি।

লোকটি তখন ওদের প্রত্যেককে এক জোড়া করে সবুজ চশমা দিল আর ডরোথিকে একটা সবুজ রঙের পোশাক দিয়ে বলল, তোমরা এগুলো পরে তৈরি হয়ে নাও। ওরা তৈরি হওয়ার পর লোকটি জাদুকরের প্রাসাদের দরজা খুলে দিল আর বলল ’জাদুকর মাত্র একবারই তোমাদের সাথে দেখা করবেন। অতএব তাড়াতাড়ি কর।’

ওরা দ্রুত যেতে শুরু করল। তবে ডরোথি সবার আগে পৌঁছে গেল জাদুকরের ঘরের কাছে কারণ ওর পায়ে ছিল সেই জাদুর জুতো।
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তাকে ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেয়া হলো। ভেতরে ঢুকে বিস্ময়ে হতবাক ডরোথির চোখের পলক আর পড়ে না। সে দেখল ঘরের ভেতর যেন হাজারো নক্ষত্র জ্বলছে আর তার মাঝে বিশাল সবুজ সিংহাসনে বসে আছে ওজের জাদুকর। তার মাথা আছে কিন্তু শরীর নেই। হাত-পা কিছুই নেই। একটা ভরাট কণ্ঠে বলল, ’আমি সেই বিখ্যাত জাদুকর। তুমি কে?’

’আমার নাম ডরোথি। আমি আমার দেশ ক্যানসাসে ফিরে যেতে চাই।’

জাদুকর আবার প্রশ্ন করল, তুমি ওই রূপালী জুতো কোথায় পেয়েছো?

ডরোথি তাকে পুরো ঘটনা খুলে বলল। সব শুনে জাদুকর বলল, নিজের দেশে ফিরতে হলে তোমাকে অবশ্যই পশ্চিমের দুষ্ট জাদুকরী ডাইনিকেও মারতে হবে। এমন সময় অন্যরাও হুড়মুড় করে এসে পড়ল। জাদুকর সবার কথা শুনল এবং একই উত্তর দিল পশ্চিমের ডাইনিকে মারতে হবে।

এরপর আর কী করা, কোথায় পাওয়া যাবে পশ্চিমের ডাইনিকে সেই খোঁজ নিয়ে ওরা বেরিয়ে পড়ল। যেতে যেতে সামনে পড়ল একটা ঘন বন। তারা সেই বনে ঢুকল। এদিকে হয়েছে কি, ডাইনি তো জেনে গেছে তাকে মারার জন্য ডরোথি আসছে। তাই সে তার হায়েনা বাহিনীকে পাঠিয়ে দিল ওদের ধরতে। হায়েনারা ছুটল। হায়েনাদের শব্দ পেয়ে ডরোথি আর তার বুরাও ছুটল। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরই ডরোথি ধরা পড়ে গেল। হায়েনারা তাকে জাদুকরের কাছে নিয়ে এল। জাদুকর তাকে দেখে খুব রেগে গেল। বলল, তোমার এত সাহস, আমাকে মারতে চাও! তুমি আমার বোনকেও মেরেছো। এর শাস্তি তুমি অবশ্যই পাবে। এখন থেকে সারাজীবন তুমি আমার চাকর হয়ে থাকবে। একজন এসে একটা বড় ব্রাশ আর বালতি দিয়ে গেল ডরোথির হাতে। এদিকে ডরোথি দেখল সে আর বাড়ি ফিরতে পারবে না। তার খুব মন খারাপ হয়ে গেল। সেই সাথে সে জাদুকরের ওপর ভীষণ রেগে গেল। রেগে গিয়ে বালতিটা পানিসহ ছুড়ে দিল জাদুকরের দিকে। সাথে সাথে অবাক করা এক কাণ্ড হলো। পানি গায়ে পড়ার পর জাদুকর আস্তে আস্তে হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। আসলে পানি লাগলেই সে মারা যাবে সে রকমই তার মৃত্যু লেখা ছিল।

জাদুকর এত সহজে মরে যাবে এ কথা ডরোথি ভাবতেও পারেনি। তাই তার সবকিছু বুঝে উঠতে কিছুটা সময় লাগল। এরপরই সে টোটোকে নিয়ে ছুটল জাদুকরের কাছে। সে জাদুকরের প্রাসাদে এসে দেখল সেখানে সাধারণ একটা প্রাসাদ দাঁড়িয়ে আছে। আর যে ঘরে জাদুকর ছিল সে ঘরটা একেবারে ফাঁকা। শুধু ঘরের মাঝে বড় একটা পর্দা ঝোলানো রয়েছে। সে জাদুকরকে ডাকল, ’আমি ডাইনিকে মেরেছি, এবার আমায় বাড়ি ফেরার পথটা বলে দিন।’ ওপাশ থেকে গমগমে গলা ভেসে এল, কাল এসো। কাল বলব।

এর মধ্যে ডরোথির অন্য বুরাও এসে পড়েছে। তারাও তাদের দাবি পূরণ করার আরজি জানাচ্ছে। কিন্তু জাদুকর সবাইকে একই কথা বলল, কাল এসো। এতে ডরোথির খুব মন খারাপ হয়ে গেল। এমন সময় তার কুকুর টোটো পর্দার ওপর দিল এক লাফ। পর্দা ছিড়ে খুলে পড়ল। আর সবাই অবাক হয়ে দেখল ওজের জাদুকর নয় বরং সেখানে দাঁড়িয়ে আছে এক বামন আকৃতির মানুষ। তাই দেখে সিংহ রেগে গিয়ে দিল এক হুঙ্কার। আর তাতে বামন ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। বলল, দাঁড়াও, দাঁড়াও বলছি। সিংহ, আর কাকতাড়ুয়া তোমরা যা চাও তা তোমাদের আছে। এর জন্য তোমাদের অন্যের কাছে যেতে হবে না। তোমরা মনে মনে বলবে আমার আছে তাহলেই হবে। আর পশ্চিমের ডাইনি যেহেতু মরে গেছে তাই তার জাদুও শেষ হয়ে যাবে শিগগিরই। তখন টিনের কাঠুরে আবার মানুষ হয়ে যাবে। ডরোথি, তোমার পায়ে যে জাদুর জুতো আছে তাই তোমাকে পৌঁছে দেবে তোমার দেশে। এই বলে সেই বামন লোকটা দৌড়ে পালিয়ে গেল। এবার ফেরার পালা। বুদের বিদায় জানিয়ে টোটোকে নিয়ে ডরোথি জুতোকে বলল, আমাকে বাড়ি নিয়ে চল। সাথে সাথে একটা ঝড়ো ঘূর্ণি উঠল আর যখন থামল, ডরোথি দেখল সে বাড়ির সামনের মাঠে দাঁড়িয়ে আছে। তার খালা আর খালু তাকে দেখে ছুটে এল। এরপর ডরোথি তার খালা আর খালুর সাথে আনন্দে দিন কাটাতে লাগল আর দুষ্ট জাদুকররা মরে যাওয়ায় পৃথিবীতে শান্তি ফিরে এল।
 
 
Nahid

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৩

তুমি কেমনে এত নিঠুর হইলা

তুমি কেমনে এত নিঠুর হইলা
অন্তত পোড়াইয়া
ভালোবাসার সব শিখাইয়া
না চাইলা ফিরিয়া
দুঃখ আমার ভালোবাসা
দুঃখ আমার জীবন
আমার দুঃখের মাঝে সুখ খুঁজেছি
সারাটা জনম
তুমি কাছে আইসা দুঃখটারে
বাড়াইয়া গেলা
এই জনমে তোমার আমার
হইব নারে মিলন
আমার বুকের ভিতর আগুন জ্বলে
তুষেরই মতন
আমি আরেক জনম চাইব শুধু
তোমারও লাগিয়া


NaHiD

মেয়ে মানুষ পটানোর মহা মূল্যবান বাণী। কাজে লাগলে জানাবেন।

# আপনার কাছে কি কোন ম্যাপ আছে? আমি আপনার চোখে হারিয়ে গিয়েছি কিনা! # আপনি কি খুব ক্লান্ত? কারণ অনেকদিন ধরে আপনি আমার হৃদয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন! # আপনার কোন জমজ বোন আছে? না থাকলে আপনিই বিশ্বের সেরা সুন্দরী! # আপনি কি কোন ম্যাজিশিয়ান? আপনাকে দেখলে আমার চার পাশের সব কিছু উধাও হয়ে যায়! # আমার চোখে কিছু সমস্যা হয়েছে নিশ্চয়। আপনার দিক থেকে চোখ সরাতেই পারছিনা! # ম্যাকডোনাল্ডে গেছেন কখনো? আপনার নামে এরা একটা বার্গার পেশ করেছে – ম্যাক গর্জিয়াস! # এই কক্ষ/ শ্রেণীর সব থেকে সুন্দরী মেয়ে হতে কেমন লাগছে? # স্বর্গ থেকে কিভাবে নেমে এলেন? সিড়ি দিয়ে না লিফটে? # আপনিঃ আপনি কি গ্রীস থেকে এসেছেন? সেঃ কেনো? আপনিঃ আমি ভেবেছিলাম সব দেবীরাই গ্রীস থেকে আসে! # আপনি কি “লাভ এট ফার্স্ট সাইট” এ বিশ্বাস রাখেন, নাকি আরেকবার ঘুরে আসবো? # আপনিঃ আপনাকে গ্রেফতার করতে এসেছি! সেঃ কেনো? আপনিঃ আমার হৃদয় চুরি করার জন্য! # আমি আমার ফোন নাম্বার হারিয়ে ফেলেছি। আপনারটা ধার করতে পারি? # আপনার হৃদয়ের রাস্তাটা বলে দিবেন? আমি আপনার চোখেই হারিয়ে গিয়েছি কিনা! # আমি “মেইড ইন বাংলাদেশ” জিনিসই পছন্দ করি, কিন্তু আপনার গায়ে দেখলাম “মেইড ইন হ্যাভেন” লেখা! # একটা ফুল দিয়ে বলা যেতে পারে, “এই ফুলটাকে দেখাচ্ছিলাম আপনি কতো সুন্দর!” # আমি আপনার চোখে জল হতে চাই। আপনার চোখে জন্মে, আপনার গাল বেয়ে আপনার মুখে গিয়ে শেষ হয়ে যাবো! # দাড়ান! আমাকে একবার স্বর্গে ফোন করতে হবে! ওখান থেকে নিশ্চয় একজন হুরপুরী হারিয়ে গেছে! লিখাটি সংগ্রহীত। ভাল লাগল তাই শেয়ার করলাম।

শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৩

কয়েকদিন থেকে নানা ব্যস্ততার
কারনে ঘটনাটি শেয়ার করতে পারিনি ।
তো যাই হোক, আমার বাড়ী থেকে দক্ষিনপূর্ব
কোণে কালসারডাড়া নামক
একটি স্থানে মাঝে মধ্যে যেতে হয় আমার
ব্যবসায়িক কারনে । আমার বাড়ী থেকে ঐ যায়গার দূরত্ব মাত্র ১০ কিঃমিঃ ।
আমি অবশ্য বাইকটা নিয়েই চলাচল
করি সেখানে । কয়েকদিন আগেও গিয়েছিলাম
সেই যায়গায় । নানা কাজ সেরে সেদিন
বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত
শোয়া এগারোটা বেজে গেল । মনের মধ্যে খানিকটা ভয় কাজ করছিল । একঃ চোর
ডাকাতের দুইঃ জ্বিন ভূতের । ঐ যায়গায়
যাওয়ার পথে অনেক পুরাতন কবরস্থান সংলগ্ন
একটি ঈদগাহ মাঠ পড়ে । অবশ্য এই ঈদগাহ
মাঠ ও কবরস্থানের আশে পাশে কোন
জনবসতি নেই । বিশাল বিস্তীর্ন পাথারের মাঝে এটি অবস্থিত । এ
যায়গাটি নিয়ে নানা কল্প কাহীনিও
ছড়িয়ে আছে মানুষের মাঝে ।
এখানে নাকি অনেকেই অনেক ভৌতিক ঘটনার
সম্মুখিন হয়েছেন । সন্ধ্যার পর তাই এই
রাস্তা দিয়ে মানুষের চলাচল কম । চলাচল করলেও দলবেধে বা সাথী ছাড়া কেউ
করেনা । যদিও আমি এগুলোকে তেমন
একটা গুরুত্ব দেইনা ।
হয়তঃ আপনারা মনে করছেন আমি খুব সাহসী,
আসলে তা নয় একটু একটু ভয়ও কিন্তু করি ।
বাড়ী ফিরছিলাম একা একাই । ঘড়ির কাঁটা রাত ১১:১৫ যথারীতি ৫০-৬০
কিঃমিঃ বেগে ড্রাইভ করছি । জনমানবহীন
রাস্তা, চলছি আমি একা, রাস্তার দু
ধারে লাগানো মেহগনি গাছের সারি ।
রাতের বেলা এমন
রাস্তা দিয়ে যেতে ধরলে কার না গাঁ ছমছম করে ।
যখন ভৌতিক যায়গা থেকে মাত্র ১
কিঃমি দূরে ঠিক তখনই আমার
শরীরটা অজানা এক ভয়ে শিউরে উঠলো ।
যায়গাটি তাড়াতাড়ি পার হওয়ার জন্য
বাইকের গতি বাড়ালাম । প্রায় ৮০ কিঃমিঃ বেগে চলছে , মিটারে লক্ষ্য করলাম
। এখন আমি যায়গাটির ঠিক ১৫-২০ গজ দূরে ।
কলিজাটা আরেকবার মোচড় দিয়ে উঠলো ।
কবরস্থান ক্রস করছি ঠিক এমন সময় কোন
কারন ছাড়াই গাড়ীর হেডলাইট অফ হয়ে গেল



NAHID
কয়েকদিন থেকে নানা ব্যস্ততার
কারনে ঘটনাটি শেয়ার করতে পারিনি ।
তো যাই হোক, আমার বাড়ী থেকে দক্ষিনপূর্ব
কোণে কালসারডাড়া নামক
একটি স্থানে মাঝে মধ্যে যেতে হয় আমার
ব্যবসায়িক কারনে । আমার বাড়ী থেকে ঐ যায়গার দূরত্ব মাত্র ১০ কিঃমিঃ ।
আমি অবশ্য বাইকটা নিয়েই চলাচল
করি সেখানে । কয়েকদিন আগেও গিয়েছিলাম
সেই যায়গায় । নানা কাজ সেরে সেদিন
বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত
শোয়া এগারোটা বেজে গেল । মনের মধ্যে খানিকটা ভয় কাজ করছিল । একঃ চোর
ডাকাতের দুইঃ জ্বিন ভূতের । ঐ যায়গায়
যাওয়ার পথে অনেক পুরাতন কবরস্থান সংলগ্ন
একটি ঈদগাহ মাঠ পড়ে । অবশ্য এই ঈদগাহ
মাঠ ও কবরস্থানের আশে পাশে কোন
জনবসতি নেই । বিশাল বিস্তীর্ন পাথারের মাঝে এটি অবস্থিত । এ
যায়গাটি নিয়ে নানা কল্প কাহীনিও
ছড়িয়ে আছে মানুষের মাঝে ।
এখানে নাকি অনেকেই অনেক ভৌতিক ঘটনার
সম্মুখিন হয়েছেন । সন্ধ্যার পর তাই এই
রাস্তা দিয়ে মানুষের চলাচল কম । চলাচল করলেও দলবেধে বা সাথী ছাড়া কেউ
করেনা । যদিও আমি এগুলোকে তেমন
একটা গুরুত্ব দেইনা ।
হয়তঃ আপনারা মনে করছেন আমি খুব সাহসী,
আসলে তা নয় একটু একটু ভয়ও কিন্তু করি ।
বাড়ী ফিরছিলাম একা একাই । ঘড়ির কাঁটা রাত ১১:১৫ যথারীতি ৫০-৬০
কিঃমিঃ বেগে ড্রাইভ করছি । জনমানবহীন
রাস্তা, চলছি আমি একা, রাস্তার দু
ধারে লাগানো মেহগনি গাছের সারি ।
রাতের বেলা এমন
রাস্তা দিয়ে যেতে ধরলে কার না গাঁ ছমছম করে ।
যখন ভৌতিক যায়গা থেকে মাত্র ১
কিঃমি দূরে ঠিক তখনই আমার
শরীরটা অজানা এক ভয়ে শিউরে উঠলো ।
যায়গাটি তাড়াতাড়ি পার হওয়ার জন্য
বাইকের গতি বাড়ালাম । প্রায় ৮০ কিঃমিঃ বেগে চলছে , মিটারে লক্ষ্য করলাম
। এখন আমি যায়গাটির ঠিক ১৫-২০ গজ দূরে ।
কলিজাটা আরেকবার মোচড় দিয়ে উঠলো ।
কবরস্থান ক্রস করছি ঠিক এমন সময় কোন
কারন ছাড়াই গাড়ীর হেডলাইট অফ হয়ে গেল



NAHID

শুকিয়ে যাওয়া নীল গোলাপের সাথে তোমার
কথোপকথন
By: Icarus Er Dana যান্ত্রিক নগরীর ব্যাস্ততার
ভীরে আস্তে আস্তে কিভাবে যেন নিজেও
যান্ত্রিক হয়ে পড়েছি বুঝতেই পারিনি। মনের
স্মৃতির পাতায় এখন আর কেউ
উকি মারেনা কিংবা রাত জেগে চাঁদের আলোয়
অতীতের কোন চিঠিও পড়া হয়না। এত সব কিছু ভাবার সময়ও পাইনা আসলে। তবে অলস ঘুমহীন
রাতে কখনো কখনো মনের ভুলে দু’একবার তোমার
সাথে কথা হয়ে যায়। তেমন কোন রাতে হঠাৎ
করেই যেন মুঠোফোনটা বেজে উঠে......
“হ্যালো...”
“কেমন আছ?” “কে বলছেন?”
“এত তাড়াতাড়ি আমাকে ভুলে গেলে?”
“ওহ, তুমি?...”
“সত্যিই মনে হয় ভুলে গেছ!”
“নাহ,কিছু মানুষকে সহজে ভোলা যায়না,
ঘৃণা করার জন্য হলেও মনে রাখতে হয়...কথাটা কার কাছে যেন
শুনেছিলাম। আমারও সেটা মনে হয়।
তবে ভুলে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ ছয় বছর সময়
কি যথেষ্ট না?”
“যথেষ্ট কিনা জানিনা, তবে আমি ভেবেছিলাম
তুমি কখনোই আমাকে ভুলতে পারবে না।“ “ব্যাপারটা আসলে পারা না পারার
কিনা জানিনা, তবে সময় আর তুমি দুজনেই
আমাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছ।”
“আমি... কিভাবে?”
“থাক, সে কথা নাহয় নাই’বা শুনলে... অতীতের
দুঃস্বপ্নগুলো আর মনে করতে চাইনা।” “কেমন আছ কিন্তু বল্লেনা”
“যেমন থাকার কথা... কেন তুমি কি ভেবেছ
আমি এখনো তোমার মায়ার জালে সারাজীবন
বন্দী থাকব?।”
“এভাবে বলছ কেন?”
“আচ্ছা বাদ দাও, বল এতদিন পর হঠাৎ কি মনে করে?”
“কেন, কোন উদ্দেশ্য ছাড়া তোমাকে কল
করা যায় না?”
“সেটা অন্য কেউ হলে বলা যেত। ”
“নাহ, তোমার কথা অনেকদিন ধরেই
মনে পড়ছিল,অনেক কষ্টে তোমার এই নতুন নাম্বারটা যোগার করলাম...
আচ্ছা তুমি নাম্বার কেন বদলালে ?”
“অপ্রত্যাশিত কেউ যেন আমাকে খুঁজে না পায়।”
“আমিও কি তোমার কাছে অপ্রত্যাশিত?”
“ছয় বছর আগে হয়ত ছিলেনা, সময় বদলায়...
সাথে সাথে মানুষের প্রত্যাশাও ” “তুমি কি আমাকে এখন অনেক ঘৃণা কর?”
“সেটা জেনে কি হবে?”
“কিছু হবেনা, এমনি বললাম। আচ্ছা,
তুমি এখনো বিয়ে করনি কেন?”
“তেমন কাউকে এখনো পাইনি বলে, যখন পাব
তখন অবশ্যই করব। চীরকুমার থাকার ইচ্ছা নেই”
“তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেল, তোমার
সুখী বিবাহিত জীবন দেখতে ইচ্ছা করছে।”
“আমার বিবাহিত জীবন তোমার না দেখলেও
চলবে, তোমার বিবাহিত জীবনের কি অবস্থা?”
“আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে দুই বছর হল।” “ওহ, আই অ্যাম সরি...”
“আমার সিদ্ধান্তটা আসলে আমার জীবনের
সবচাইতে বড় ভুল ছিল, ওকে আমি চিনতে ভুল
করেছিলাম”
“তারপর...কি করছ এখন?”
“একটা প্রাইভেট ফার্ম এ আছি” “ভাল।”
“তুমি অনেক বদলে গেছ। আগে শুধু তুমিই
কথা বলতে, তোমার কথা শেষই হতনা। ফোন
করলে রাখতেই চাইতে না, আমি বিরক্ত
হয়ে যেতাম...। আর এখন তোমার মুখ দিয়ে কথাই
বের হচ্ছেনা। কেমন যেন করে কথা বলছ তুমি।”
“আগের তুমিও তো নেই!”
“একটা কথা বলি?”
“বল।”
“আমি জানি আমি তোমার ক্ষমার যোগ্য নই, তবু
বলছি... আমাকে যদি পার প্লিজ ক্ষমা করে দিও?”
“তোমার জন্য রাখা আমার নীল
গোলাপগুলী শুকিয়ে গেছে অনেক আগেই।”
“মানে?”
“মানে,
আমি যদি তোমাকে কখনো ক্ষমা করি তাহলে আমার আত্মা আমাকে কখনো ক্ষমা করবেনা!!






NaHiD

শুকিয়ে যাওয়া নীল গোলাপের সাথে তোমার
কথোপকথন
By: Icarus Er Dana যান্ত্রিক নগরীর ব্যাস্ততার
ভীরে আস্তে আস্তে কিভাবে যেন নিজেও
যান্ত্রিক হয়ে পড়েছি বুঝতেই পারিনি। মনের
স্মৃতির পাতায় এখন আর কেউ
উকি মারেনা কিংবা রাত জেগে চাঁদের আলোয়
অতীতের কোন চিঠিও পড়া হয়না। এত সব কিছু ভাবার সময়ও পাইনা আসলে। তবে অলস ঘুমহীন
রাতে কখনো কখনো মনের ভুলে দু’একবার তোমার
সাথে কথা হয়ে যায়। তেমন কোন রাতে হঠাৎ
করেই যেন মুঠোফোনটা বেজে উঠে......
“হ্যালো...”
“কেমন আছ?” “কে বলছেন?”
“এত তাড়াতাড়ি আমাকে ভুলে গেলে?”
“ওহ, তুমি?...”
“সত্যিই মনে হয় ভুলে গেছ!”
“নাহ,কিছু মানুষকে সহজে ভোলা যায়না,
ঘৃণা করার জন্য হলেও মনে রাখতে হয়...কথাটা কার কাছে যেন
শুনেছিলাম। আমারও সেটা মনে হয়।
তবে ভুলে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ ছয় বছর সময়
কি যথেষ্ট না?”
“যথেষ্ট কিনা জানিনা, তবে আমি ভেবেছিলাম
তুমি কখনোই আমাকে ভুলতে পারবে না।“ “ব্যাপারটা আসলে পারা না পারার
কিনা জানিনা, তবে সময় আর তুমি দুজনেই
আমাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করেছ।”
“আমি... কিভাবে?”
“থাক, সে কথা নাহয় নাই’বা শুনলে... অতীতের
দুঃস্বপ্নগুলো আর মনে করতে চাইনা।” “কেমন আছ কিন্তু বল্লেনা”
“যেমন থাকার কথা... কেন তুমি কি ভেবেছ
আমি এখনো তোমার মায়ার জালে সারাজীবন
বন্দী থাকব?।”
“এভাবে বলছ কেন?”
“আচ্ছা বাদ দাও, বল এতদিন পর হঠাৎ কি মনে করে?”
“কেন, কোন উদ্দেশ্য ছাড়া তোমাকে কল
করা যায় না?”
“সেটা অন্য কেউ হলে বলা যেত। ”
“নাহ, তোমার কথা অনেকদিন ধরেই
মনে পড়ছিল,অনেক কষ্টে তোমার এই নতুন নাম্বারটা যোগার করলাম...
আচ্ছা তুমি নাম্বার কেন বদলালে ?”
“অপ্রত্যাশিত কেউ যেন আমাকে খুঁজে না পায়।”
“আমিও কি তোমার কাছে অপ্রত্যাশিত?”
“ছয় বছর আগে হয়ত ছিলেনা, সময় বদলায়...
সাথে সাথে মানুষের প্রত্যাশাও ” “তুমি কি আমাকে এখন অনেক ঘৃণা কর?”
“সেটা জেনে কি হবে?”
“কিছু হবেনা, এমনি বললাম। আচ্ছা,
তুমি এখনো বিয়ে করনি কেন?”
“তেমন কাউকে এখনো পাইনি বলে, যখন পাব
তখন অবশ্যই করব। চীরকুমার থাকার ইচ্ছা নেই”
“তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেল, তোমার
সুখী বিবাহিত জীবন দেখতে ইচ্ছা করছে।”
“আমার বিবাহিত জীবন তোমার না দেখলেও
চলবে, তোমার বিবাহিত জীবনের কি অবস্থা?”
“আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে দুই বছর হল।” “ওহ, আই অ্যাম সরি...”
“আমার সিদ্ধান্তটা আসলে আমার জীবনের
সবচাইতে বড় ভুল ছিল, ওকে আমি চিনতে ভুল
করেছিলাম”
“তারপর...কি করছ এখন?”
“একটা প্রাইভেট ফার্ম এ আছি” “ভাল।”
“তুমি অনেক বদলে গেছ। আগে শুধু তুমিই
কথা বলতে, তোমার কথা শেষই হতনা। ফোন
করলে রাখতেই চাইতে না, আমি বিরক্ত
হয়ে যেতাম...। আর এখন তোমার মুখ দিয়ে কথাই
বের হচ্ছেনা। কেমন যেন করে কথা বলছ তুমি।”
“আগের তুমিও তো নেই!”
“একটা কথা বলি?”
“বল।”
“আমি জানি আমি তোমার ক্ষমার যোগ্য নই, তবু
বলছি... আমাকে যদি পার প্লিজ ক্ষমা করে দিও?”
“তোমার জন্য রাখা আমার নীল
গোলাপগুলী শুকিয়ে গেছে অনেক আগেই।”
“মানে?”
“মানে,
আমি যদি তোমাকে কখনো ক্ষমা করি তাহলে আমার আত্মা আমাকে কখনো ক্ষমা করবেনা!!






NaHiD